কাদাজল মেখেই বেচাকেনা বড়হাটে

মাথার উপরে আচ্ছাদন নেই। আবর্জনা সাফাইয়ের বালাই নেই বললেই চলে। নিকাশি ব্যবস্থাও অত্যন্ত বেহাল। বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যাগুলো নিয়েই চলছে পুরুলিয়া শহরের শতবর্ষ প্রাচীন বড়হাট। দৈনিক শাক-সব্জি বা মাছের প্রধান বাজার বলতে এই বাজারটিই রয়েছে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে এই হাটের এখন জরাজীর্ণ অবস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৪ ০১:৫৬
Share:

পুরুলিয়ার বড়হাটের রোজকার চিত্র। ছবি: সুজিত মাহাতো।

মাথার উপরে আচ্ছাদন নেই। আবর্জনা সাফাইয়ের বালাই নেই বললেই চলে। নিকাশি ব্যবস্থাও অত্যন্ত বেহাল। বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যাগুলো নিয়েই চলছে পুরুলিয়া শহরের শতবর্ষ প্রাচীন বড়হাট।

Advertisement

দৈনিক শাক-সব্জি বা মাছের প্রধান বাজার বলতে এই বাজারটিই রয়েছে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে এই হাটের এখন জরাজীর্ণ অবস্থা। প্রতিদিন হেঁসেলের জোগান দিতে যাঁরা এই হাটে আসেন এবং রুটিরুজির জন্য শহর লাগোয়া বা দূরের গ্রাম থেকে যাঁরা সব্জি নিয়ে এখানে ব্যবসা করতে আসেন, দু’পক্ষই হাটের এই অব্যবস্থায় সমান ভাবে বিরক্ত।

ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, এখানে আবর্জনা সাফাই হয় না বললেই চলে। প্রতিদিন যে পরিমাণে আবর্জনা জমা হয় হাটে, তার কিছুটা প্রতিদিন দুপুরে পরিষ্কার করা হলেও বাকিটা পড়েই থাকে। আর সেই বর্জ্য প্রায়দিনই হাটের পিছনের দিকে ফেলে দেওয়া হয়। তা থেকে বিকেলে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। হাটতলা রোড দিয়ে যে সব পথচারীরা যাতায়াত করেন, দুর্গন্ধে তাঁদের প্রাণ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে।

Advertisement

হাটের বাইরে রাস্তার ধার ঘেঁষে একটি প্রস্রাবাগার তৈরি করেছিল পুরসভা। কিন্তু সেখানে নিকাশি ব্যবস্থা ঠিকমতো না তৈরি করায় নোংরা জল রাস্তার উপরে গড়াচ্ছে। সেই জল মাড়িয়েই পথচারী বা হাটে আসা লোকজনকে চলাচল করতে হয়। প্রতিদিন হাটে কমবেশি ৩০০ বিক্রেতা সাইকেলে করে সব্জি নিয়ে আসেন। তাঁদের বেশির ভাগের জন্যই মাথার উপরে কোনও ছাউনি নেই। রোদ-বৃষ্টি মাথায় করেই তাঁদের বেচাকেনা করতে হয়। মাছের বাজার নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। ক্রেতাদের বক্তব্য, মাছের বাজারে যেটুকু অংশ পাকা প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, সেখানে সব মাছ বিক্রেতার জায়গা হয় না। অনেকেই মাটির উপর মাছ বিক্রি করতে বসেন। সামান্য বৃষ্টিতেই জল-কাদা ও মাছের আবর্জনায় ওই এলাকায় পা ফেলা দায় হয়ে ওঠে।

পুরুলিয়া শহরের নিমটাঁড়ের বাসিন্দা শিবাজী চট্টোপাধ্যায়, নামোপাড়ার বাসিন্দা শ্রীমন সরকার বলেন, “মাছের বাজারের অবস্থা এমন যে নিশ্চিন্তে হেঁটে বাজার করার জো নেই। পুরো পরিবেশটাই নোংরা। গা ঘিন ঘিন করে।” শহরের আর এক বাসিন্দা আইনজীবী অরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাজার করতে হয় বলেই বাধ্য হয়ে ওই হাটে যাই। জনপ্রতিনিধিদের কারও হাটের হাল ফেরানোয় নজর নেই।”

বেলগুমা গ্রাম থেকে হাটে সব্জি বিক্রি করতে আসেন রোহিমন বিবি, মনুবালা মাহাতো। তাঁদের ক্ষোভ, “প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার মতো কোনও আড়াল এখানে নেই। আমাদের কথা কেউ ভাবে না।” হাট কমিটির সম্পাদক সুকুমার সাও বলেন, “হাটের সমস্যার কথা বার বার আমরা পুরসভাকে জানিয়েছি। কিন্তু হাট সংস্কারের আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কিছুই করেননি পুর কর্তৃপক্ষ।” পুরুলিয়ার পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “হাটটির সামগ্রিক সংস্কারের ইচ্ছা রয়েছে। পিপিপি মডেলে এই সংস্কার করা হবে।” কিন্তু কবে হবে তার সদুত্তর অবশ্য মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement