পাত্রসায়রে দ্বন্দ্ব ফের সামনে

এ বার হামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

এলাকার দখল দলের কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে, তা নিয়ে তৃণমূলের কোন্দল ক্রমেই বেড়ে চলেছে বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে। কখনও এক গোষ্ঠীর নেতার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধ গোষ্ঠী থানায় অভিযোগ করছে। আবার অভিযুক্ত পক্ষ পাল্টা নালিশ ঠুকছে পুলিশের কাছে। গত কয়েক দিনের ঘটনাক্রম অন্তত তাই বলছে। এ বার বালসি ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই এক কর্মীর বাড়িতে হামলার পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ও মাকে মারধর, শ্লীলতাহানি করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০২:১৮
Share:

এলাকার দখল দলের কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে, তা নিয়ে তৃণমূলের কোন্দল ক্রমেই বেড়ে চলেছে বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে। কখনও এক গোষ্ঠীর নেতার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধ গোষ্ঠী থানায় অভিযোগ করছে। আবার অভিযুক্ত পক্ষ পাল্টা নালিশ ঠুকছে পুলিশের কাছে। গত কয়েক দিনের ঘটনাক্রম অন্তত তাই বলছে।

Advertisement

এ বার বালসি ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই এক কর্মীর বাড়িতে হামলার পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ও মাকে মারধর, শ্লীলতাহানি করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের হল। পাত্রসায়র থানার ভালুকবান্দি গ্রামে রবিবার রাতের ঘটনা। ওই গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্ত বাগদির স্ত্রী সোমবার পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা বুদ্ধদেব পাল, শিবু মিদ্যা-সহ ৯ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ ‘সাজানো’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বুদ্ধদেববাবু। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও এ দিন বিকেল পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি।

শ্রীকান্তবাবুর দাবি, তিনি ব্লক তৃণমূল নেতা নব পালের অনুগামী বলে বুদ্ধদেব পাল, শিবু মিদ্যা-সহ কয়েক জন তাঁকে কিছুদিন ধরেই হুমকি দিচ্ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “রবিবার রাতে আমি হরিনাম শুনতে গিয়েছিলাম। সেই সুযোগে বুদ্ধদেব পাল, শিবু মিদ্যার নেতৃত্বে কয়েক জন বাড়িতে চড়াও হয়ে স্ত্রী ও মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে নগদ টাকা, সোনার দুল, আংটি লুঠ করে। স্ত্রী-র শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করেছে দুষ্কৃতীরা।” নব পালের অভিযোগ, বুদ্ধ পাল, শিবু মিদ্যা-সহ কয়েকজন বালসি ২ পঞ্চায়েত এলাকায় গুন্ডারাজ কায়েম করতে চাইছেন। সেজন্যই বেছে বেছে ওদের বিরোধী গোষ্ঠীর কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা করা হচ্ছে। নববাবু বলেন, “অভিযোগ করার পরেও পুলিশ কিছুই করেনি।”

Advertisement

দলের গোষ্ঠী রাজনীতিতে পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের অনুগামী এবং নব পালের কট্টর বিরোধী শিবিরের নেতা হলেন বুদ্ধদেব পাল ও শিবু মিদ্যা। তাঁদের বক্তব্য, “রবিবার বালসির ব্যাঙ্কমোড়ে দলের পার্টি অফিসে আমরা আইপিএল ফাইনাল দেখেছি। রাত ১২টা পর্যন্ত সেখানেই ছিলাম। তবে, শ্রীকান্ত বাগদি বাড়িতে বেআইনি চোলাই মদ বিক্রি করেন। সেই কারণেই গ্রামের কিছু লোকের সঙ্গে তাঁর পরিবারের বচসা হয়েছে বলে শুনেছি।” পঞ্চায়েত প্রধান বুদ্ধদেববাবুর আরও দাবি, তৃণমূলের প্রকৃত কর্মীরা নব পালের সঙ্গে নেই। তাই সিপিএমের কায়দায় দলেরই সক্রিয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে এলাকায় মাটি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। স্নেহেশবাবুর অনুগামী বালসি ২ অঞ্চল তৃণমূল নেতা শেখ মিরাজের আবার দাবি, শনিবার সকালে বারাসত মোড়ে দলের এক কর্মীকে মারধর করে নব পালের খুড়তুতো ভাই টাকা ছিনতাই করেছে। সেই অভিযোগেরই পাল্টা হিসাবে এ দিন নব পাল দলের প্রথম সারির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন।

ভালুকবান্দি গ্রামেরই বাসিন্দা তথা বালসি ২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মঞ্জু বাগদির দাবি, পাড়ায় বেআইনি চোলাই মদ বিক্রি হয় শ্রীকান্তর বাড়ি থেকে। সেই কারণে এলাকায় অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। চোলাই বিক্রি বন্ধ করতে পাড়ার কয়েক জন রবিবার রাতে শ্রীকান্ত-র বাড়িতে যান। তাঁর স্ত্রী বা মাকে কেউ মারধর করেননি। চোলাই মদ বিক্রির জন্য শ্রীকান্তর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন উপপ্রধান। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, আসল ঘটনা কী, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement