‘আমিই প্রার্থী’ মিছিলে দাবি তৃণমূল নেতার

সাঁইথিয়া দেখেছে তৃণমূল নেতার নামে ভোটের দেওয়াল লিখন। এ বার রামপুরহাট দেখল, নিজের জনসমর্থন দেখাতে তৃণমূল নেতা নিজেকে প্রার্থী বলে দাবি করে মিছিল করলেন। রামপুরহাট পুরসভায় প্রার্থীদের নামই ঘোষণা করেনি তৃণমূল। অথচ সোমবার রীতিমতো দলবল নিয়ে আসরে নেমে পড়লেন রামপুরহাট শহরের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বুড়ান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৫ ০০:৪১
Share:

প্রচারে ‘স্বঘোষিত’ প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।

সাঁইথিয়া দেখেছে তৃণমূল নেতার নামে ভোটের দেওয়াল লিখন। এ বার রামপুরহাট দেখল, নিজের জনসমর্থন দেখাতে তৃণমূল নেতা নিজেকে প্রার্থী বলে দাবি করে মিছিল করলেন।

Advertisement

রামপুরহাট পুরসভায় প্রার্থীদের নামই ঘোষণা করেনি তৃণমূল। অথচ সোমবার রীতিমতো দলবল নিয়ে আসরে নেমে পড়লেন রামপুরহাট শহরের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বুড়ান। পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে এ দিন সকালে নিজেকে প্রার্থী দাবি করে প্রচারে বেরিয়ে পড়লেন তিনি। এক সময়ের জেলা টিএমসিপি-র সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অভিষেক ওরফে বুড়ান। তাই ‘দাদা’ প্রার্থী হয়েছেন শুনে তাঁর পাশে দাঁড়াতে প্রচারে ছিলেন নলহাটি এবং রামপুরহাট কলেজের টিএমসিপি সদস্যেরা। এই দৃশ্য দেখে পোড় খাওয়া তৃণমূল নেতাদের মতোই সদ্য দলে যোগ দেওয়া কর্মীরাও অবাক। তাঁদের অনেকেই বলেন, বামবিরোধী দলে প্রার্থী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে কখনও সখনও নেতারা নিজেদের অনুগামীদের দিয়ে আগ বাড়িয়ে দেওয়ালে নিজের নাম লেখান। এমনটা সাঁইথিয়াতেই এ বার হয়েছে বলে খবর। এতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে চাপে রাখা যায় বলে তাঁদের দাবি। কিন্তু দল প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার আগে এ ভাবে দলবল নিয়ে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে মিছিল করা সত্যিই বিরল।

রাজ্য নেতৃত্ব অনুমোদনের আগে কেন এই প্রচার? রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকলে বিরোধীদের এই কৌশলে চাপে রাখা যায়। আবার ওই ওয়ার্ডে একাধিক নাম উঠলে, সে ক্ষেত্রে মিছিলের ভিড় দেখিয়ে দলের কাছে নিজের জনসমর্থন কতটা রয়েছে তা জাহির করাও হয়। রামপুরহাট পুরসভার জন্য তৃণমূলের গঠিত ১৮ জনের কোর কমিটির আহ্বায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রার্থীদের নাম রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদিত না হয়ে আসা পর্যন্ত কেউ নিজেকে প্রার্থী হিসাবে দাবি করতে পারেন না। তবে পুরভোটে দলের হয়ে কেউ প্রচার চালাতেই পারেন।”

Advertisement

কিন্তু দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল শনিবার তারাপীঠে কোর কমিটির বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য নেতৃত্ব অনুমোদনের আগে প্রার্থী তালিকা কেউ যেন ঘোষণা না করেন। তারপরেও এই মিছিল হল কী ভাবে? এ ক্ষেত্রে অনুব্রত বিশদে মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর জবাব, “এটা রামপুরহাটের ব্যাপার। আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন।”

১৭ নম্বর ওয়ার্ড দীর্ঘদিন থেকে সিপিএমের দখলে। তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের রামপুরহাটের অফিস এই ওয়ার্ডে। তবুও লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং বিজেপি প্রার্থীর থেকে একমাত্র এই ওয়ার্ডে সিপিএম অনেক এগিয়ে ছিল। তৃণমূল এ বারে এই ওয়ার্ড দখলে মরিয়া। দলের রামপুরহাট শহর সভাপতি সুশান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওখানে আমাদের কর্মীদের উত্‌সাহিত করতে দলকে জানিয়ে রাজ্যজুড়ে উন্নয়নের কথা ওয়ার্ডবাসীকে জানাতেই মিছিল হয়েছে। এর বেশি কিছু হয়নি। প্রার্থীর নাম নিয়েও কিছু বলা হয়নি।”

যদিও তাঁর ঘটনাটি হাল্কা করার যাবতীয় চেষ্টায় জল ঢেলে দিয়েছেন খোদ অভিষেকই। প্রচার-মিছিল চলাকালীন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “৯ সংখ্যাটা আমার কাছে শুভ। তাই এ দিন ৯ মার্চ আমি এলাকার মানুষের কাছে আশীর্বাদ নিতে এসেছি। এই ওয়ার্ড থেকে শুধুমাত্র একটা নামই গিয়েছে, সেটা আমার নাম। তাই দলের হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ধারায় ওয়ার্ডবাসী যেন আসে সেই জন্য প্রচার করছি। এই ওয়ার্ডের উন্নয়ন আমিই করব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement