অমিত খুনে অধরা দুই নেতা, পুলিশ ফাঁসিয়েছে দাবি দুই পরিবারের

সোমবার রাত সাড়ে ১২টা। বক্রেশ্বর শ্মশানে শেষ হয় দুবরাজপুর থানার এসআই অমিত চক্রবর্তীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। এরপর প্রায় একটা দিন পেরিয়ে গেলেও নতুন করে আর কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০০:৪০
Share:

সোমবার রাত সাড়ে ১২টা। বক্রেশ্বর শ্মশানে শেষ হয় দুবরাজপুর থানার এসআই অমিত চক্রবর্তীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। এরপর প্রায় একটা দিন পেরিয়ে গেলেও নতুন করে আর কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মঙ্গলবার ঈদের দিনেও বাড়িতে ছিলেন না অভিযুক্ত তৃণমূল ও সিপিএম নেতা-কর্মীদের কেউ। উত্‌সবের দিনে তাঁদের বাড়িতে বিষাদের ছায়া বিশেষ করে ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা আভিযোগে নাম থাকা দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শেখ আলিম বা সিমিএমের দুবরাজপুর জোনাল সদস্য তথা প্রাক্তন ব্লক কৃষকসভার সভপতি সৈয়দ মকতুল হোসেনদের পরিবারে। তাঁদের পরিবারের দাবি, পুলিশ ফাঁসিয়ে দিয়েছে আলিম-মকতুলদের।

Advertisement

গত ৩ জুন দুবরাজপুরের যশপুর পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামে একটি পুকুর সংস্কার করাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-সিপিএমের মধ্যে বিবাদ থামাতে এসে বোমার আঘাতে মারাত্মক জখম হয়েছিলেন দুবরাজপুর থানার ‘টাউনবাবু’ আমিত চক্রবর্তী। ভর্তি ছিলেন দুর্গাপুরে দ্য মিশন হাসপাতালে। সেই লড়াই থেমে যায় সোমবার সকালে। ঘটনার জন্য সিপিএম ও তৃণমূল দু’পক্ষই বিপক্ষ নেতার দিকে আঙুল তুলেছে। পুলিশ দুই নেতার নাম অভিযুক্তের তালিকায় রাখলেও এখনও দুজনই অধরা। এলাকা সূত্রের খবর, ঘটনার পর থেকে সিপিএমের ওই নেতা মকতুল গা ঢাকা দিলেও নিয়মিত পঞ্চায়েত সমিতিতে আসা যাওয়া করছিলেন আলিম। কিন্তু সোমবার সকালে অমিতবাবু মারা যেতেই উধাও তৃণমূল নেতাও। দু’টি পরিবারই অবশ্য তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নির্দোষ দাবি করছেন।

মঙ্গলবার সকালে ঈদের নমাজে পর শেখ আলিমের বাবা শেখ জরদীশ অভিযোগের সুরে বললেন, “গত কয়েক মাস আগে বেআইনি কয়লা পাচার থেকে পুলিশকে তোলা আদায়ে বাধা দিয়ে স্থানীয় থানার নেক নজরে পড়েছিল আমার ছেলে। তাই এই ঘটনায় এক নম্বরে আমার ছেলের নাম রাখা হয়েছে। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই আমার ছেলে রাজনীতি করে। সে জন্য তার নাম দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের উদ্দেশ্যই ছিল আক্রোশ মেটানো। পুলিশকে বোমা মারার ঘটনায় আমার আর এক ছেলে শেখ কবারের নাম দিয়েছে।” তাঁর দাবি, “সে কোনও ভাবেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। পুলিশ তিন ও চার নম্বরে যে অভিযুক্তদের নাম দিয়েছে, যাঁরা আমার ছেলে নয় কিন্তু সেখানে বাবা হিসেবে আমার নাম দিয়েছে পুলিশ। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে সত্যিটা জানা যাবে।” প্রয়োজনে পুলিশের বিরুদ্ধে ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে তিনি আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

অন্য দিকে, সৈয়দ মকতুল হোসেনের স্ত্রী খাদেজা বিবি বলেন, “তৃণমূল ঘটনা ঘটালেও আমার স্বামীকে জড়িয়েছে পুলিশ। আর অন্য মারধরের ঘটনায় তৃণমূল আমার ছেলেদের নাম আমার দেওর ও ভাইপোর নাম দিয়েছে বলে কেউই বাড়িতে নেই। বাড়ির পুরুষদের অবর্তমানে খুব কষ্টে ঈদের দিন কাটল।” বর্ধমানের বুদবুদের ভিড়সিন গ্রামে অমিতবাবুর একটি স্মরণ সভার আয়োজন করে বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্ব জানান, এখানে অমিতবাবুদের ভিটে ছিল। সেখানে কয়েক জন আত্মীয় রয়েছেন।

জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া অবশ্য বলেন, “অভিযোগে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের গ্রেফতার করার পরে তদন্তে জানা যাবে কে দোষী বা নির্দোষ। এখন কিছু বালা সম্ভব নয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement