নানা রঙে। নিজস্ব চিত্র
শুরুটা হয়েছিল, পাঁচশো সাবান বিক্রির মাধ্যমে। আর এখন এক লক্ষ টাকার কাঁচামাল কিনে ভেষজ সাবান তৈরির মাধ্যমে আর্থিক স্বাবলম্বনের পথ খুঁজছে পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের উদয়পুর-জয়নগর পঞ্চায়েতের ‘মা সন্তোষী স্বনির্ভর গোষ্ঠী’।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, বিভিন্ন প্রকল্পে ওই গোষ্ঠীর সদস্যদের ভাল কাজ দেখে ভেষজ সাবান তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিডিও (পাড়া) গৌতম মণ্ডল জানান, গোষ্ঠীর সদস্যেরা ভেষজ সাবান তৈরিতে উৎসাহ দেখানোর পরে তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। গত বছরের নভেম্বরে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
গোষ্ঠীর সভানেত্রী চন্দনা বাউরি জানান, প্রশিক্ষণের পরে, ভেষজ সাবান তৈরির জন্য ২৫ কেজি কাঁচামাল দেওয়া হয়েছিল। তা দিয়ে পাঁচশো সাবান তৈরি করে বিক্রি করা হয় কলকাতায় রাজ্য সরকারের ‘সৃষ্টিশ্রী’তে। আয় হয় ন’হাজার টাকা।
ভাল আয়ের সঙ্গে ‘সৃষ্টিশ্রী’তে সাবানের চাহিদা দেখার পরে বড় আকারে সাবান তৈরির পরিকল্পনা করেন গোষ্ঠীর সদস্যেরা। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, কাঁচামালের অর্থ জোগাড় করা। পরে, ব্যাঙ্ক থেকে চল্লিশ হাজার টাকা ঋণ নেন জ্যোৎস্না মাহাতো, মমতা দাস, হেমলতা রায়ের মতো পনেরো জন সদস্য। চন্দনাদেবীর কথায়, ‘‘কয়েক মাসের মধ্যে সব সাবান বিক্রি হয়ে যায়। তাতে ব্যাঙ্ক ঋণ মিটিয়েও হাজার পনেরোর মতো টাকা হাতে ছিল।’’
আর এখন আরও বড় আকারে সাবান তৈরির পথে গোষ্ঠীর সদস্যেরা। তার জন্য এক লক্ষ টাকার কাঁচামালও কেনা হয়েছে। কেন এত চাহিদা সাবানের? গোষ্ঠীর সদস্যদের কথায়, ‘‘নারকেল তেল, চন্দন, নিম তেল, হলুদ, তুলসি ও প্রাকৃতিক রং দিয়ে সম্পূর্ণ ভেষজ পদ্ধতিতে তৈরি হয় সাবান। গুণগত মান ভাল হওয়ায় বিক্রি নিয়ে ভাবতে হয় না।’’
বিপণনের ক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসন সাহায্য করছে জানিয়ে বিডিও বলেন, ‘‘ওই গোষ্ঠীর তৈরি করা সাবানের গুণমান যথেষ্ট ভাল। মিড-ডে মিলে এখন সাবান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ওই গোষ্ঠীর সাবান যাতে দেওয়া হয়, তা নিয়ে স্কুলগুলির সঙ্গে গোষ্ঠীর সদস্যদের যোগাযোগ করে দেওয়া হয়েছে।”