এই দেওয়াল ভেঙেই ঘটে দুর্ঘটনা। নিজস্ব চিত্র
মেয়ের মাধ্যমিক ফল প্রকাশের দিন ঘোষণার পর থেকেই উদ্বেগে ছিলেন মা। মেয়ে পাশ করেছে। কিন্তু, সেই খবর আর জানা হলো না মায়ের। তার আগেই দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল তাঁর। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সুমিত্রা প্রামাণিক (৪২)। বাড়ি নানুরের ব্রাহ্মণডিহি গ্রামে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ বাড়ি থেকে অদূরে সরকারি টিউবওয়েল থেকে জল আনতে গিয়েছিলেন সুমিত্রা। ওই টিউবওয়েলের পাশে ছিল একটি পরিত্যক্ত টিনের চালের মাটির বাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শী বাসুদেব গড়াই, লালু হাজরা বলেন, ‘‘আমরা তখন দাঁত মাজছিলাম। উনি বলতিতে জল ভরছিলেন। আচমকা বাড়ির এক দিকের দেওয়াল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। দেওয়াল চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার।’’
ওই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। মৃতার স্বামী স্বপন প্রামানিক গ্রামে গ্রামে চুল দাড়ি কেটে বেড়ান। তাতে সংসার চলে না বলে সুমিত্রা বাড়িতেই বাচ্চাদের পড়ান। ছোটবেলায় নিজের মেয়েদেরও পড়িয়েছেন। বড় মেয়ে অর্চনার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট প্রিয়া এ বার কীর্ণাহার বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। এ দিন বাড়িতে কেউ কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। মৃতার এক ভাসুরপো তপন প্রামাণিকের কথায়, ‘‘প্রিয়ার পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে কাকিমা খুব উদ্বেগে ছিলেন। প্রিয়া ৩১৪ নম্বর নিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেছে। সেটা আর কাকিমার জানা হল না।’’
স্থানীয় বাসিন্দা তথা সংশ্লিষ্ট দাসকলগ্রাম-কড়েয়া ১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রভাত দাস জানান, মাস চারেক আগে ওই বাড়ির মালিক মারা যান। তার পর থেকেই বাড়িটি তালাবন্ধ অবস্থায় পড়েছিল। কিন্তু সেটা যে ভেঙে পড়তে পারে, তা কেউ ভাবেনি।
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |