প্রতীকী ছবি।
শিক্ষক-ছেলেকে চোখের সামনে খুন হতে দেখেছিলেন মা। সেই ঘটনায় ওই শিক্ষকেরই স্ত্রী ও তার প্রেমিককে গ্রেফতার করল পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম অজয় অম্বানি ও পাপড়ি বিশ্বাস চট্টরাজ। শনিবার রাতে অজয়কে এবং রবিবার সকালে পাপড়িকে গ্রেফতার করা হয়। পুরুলিয়া আদালতে দু’জনেরই জেল হাজতের নির্দেশ হয়েছে।
শুক্রবার রাতে পুরুলিয়া শহরের রবীন্দ্রপল্লি এলাকার চানাচুরগলির বাড়ির ভিতরে খুন হন স্থানীয় একটি কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষক অরূপ চট্টরাজ (৫১)। রাত ১০টা নাগাদ খেয়েদেয়ে দোতলার ঘরে গিয়েছিলেন তিনি। মা লীলাদেবীর দাবি, চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে তিনি দেখেন, ছেলেকে খাটের মধ্যে চেপে ধরেছে আততায়ী। নীচে লোক ডাকতে নামলে পালায়।
পরিজন এবং পড়শিরা দাবি করেন, অরূপবাবু নির্বিবাদী মানুষ ছিলেন। ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কিছু খটকার মুখোমুখি হয় পুলিশও। আততায়ীকে পালাতে দেখেছেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেন কেউ কেউ। কিন্তু সবার নজর এড়িয়ে দোতলায় সে উঠল কী করে, সেটাই স্পষ্ট হচ্ছিল না। পরিবারের দাবি, ছাদের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা ছিল। সে ক্ষেত্রে বাড়িতে ঢুকে ঘাপটি মেরে থাকার জন্য সদর দরজা ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না।
আরও পড়ুন: প্রজাতন্ত্র দিবসে দেশের বিকৃত ম্যাপ! তুমুল বিতর্কে কলকাতা পুরসভা
তদন্তকারীদের একটি সূত্রের খবর, পাপড়ির কিছু আচরণে গোড়া থেকেই অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছিল। মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড ও অন্য কিছু সূত্র খতিয়ে অজয়ের হদিস পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, অজয়ের আদি বাড়ি মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের নিউ রামনগর আমখেরায়। তার বাবা এক সময়ে চাকরি সূত্রে ঝাড়খণ্ডের সুদামডিতে ছিলেন। অজয় ছিল পুরুলিয়ার জেকে কলেজের ছাত্র। সহপাঠী পাপড়ির সঙ্গে তখন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। কিন্তু কলেজের পরে দু’জন বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। আলাদা আলাদা ভাবে সংসারও পাতেন।
বছর আড়াই আগে ফেসবুকে ফের ওই দু’জনের যোগাযোগ গড়ে ওঠে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই সূত্রের দাবি, পাপড়িকে সংসার ছেড়ে বেরিয়ে আসার জন্য চাপ দিচ্ছিল অজয়। শুক্রবার পাপড়ির সাহায্যেই সে সদর দরজা দিয়ে বাড়িতে ঢোকে। খুন করার পরে সঙ্গে থাকা দড়ি বেয়ে ছাদ থেকে নেমে পালায়। এখন কাজের সূত্রে ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে থাকে অজয়। শনিবার জেলা পুলিশের দল সেখানে গিয়ে তাকে ধরে আনে।