আনারুল হোসেন। নিজস্ব চিত্র
রামপুরহাট-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে স্থানীয় ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনারুল হোসেনের। নিহতদের আত্মীয়েরা অভিযোগ করছেন তাঁর বিরুদ্ধে। দলের লোক হলেও বৃহস্পতিবার বগটুই গ্রামে পা রেখে সেই আনারুলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে থানায় আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায়, পুলিশকে দিয়েছেন গ্রেফতার করার নির্দেশ। কে এই আনারুল হোসেন?
বীরভূমের রামপুরহাট শহর লাগোয়া সন্ধিপুর এলাকার বাসিন্দা বছর বাহান্নর আনারুল। এক সময় ওই এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি। সেই সময় কংগ্রেসের সমর্থক ছিলেন। তৃণমূল তৈরি হওয়ার পর থেকে আনারুল কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দেন জোড়াফুল শিবিরে। রাজনীতির ময়দানে নেমে বীরভূমের মাটিতে দক্ষ সংগঠক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। সেই সূত্রেই ধীরে ধীরে রামপুরহাটের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিধানসভার বর্তমান ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি। পাশাপাশি, তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বৃত্তেও চলে এসেছিলেন। একটু একটু করে দলে প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে আনারুলের। তাঁকে রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের সভাপতি করে দল। সাংগঠনিক দিক থেকে বগটুই গ্রাম ছিল আনারুলের আওতাতেই। বীরভূমের তৃণমূল শিবিরের একটি অংশের বক্তব্য, নিজের এলাকায় আনারুল হয়ে উঠেছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা।
আনারুল হোসেনের খোঁজে তাঁর বাড়িতে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
রামপুরহাটের বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন এবং তার পরবর্তী ঘটনায় আগুনে পুড়ে কয়েক জনের মৃত্যুর ঘটনায় শুরু থেকেই আনারুলের নাম উঠতে শুরু করে। যাঁরা পুড়ে মারা গিয়েছেন তাঁদের আত্মীয়দের দাবি, ব্লক সভাপতি হওয়ার দরুণ প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে ওঠাবসা রয়েছে আনারুলের। নিহতদের আত্মীয়দের আরও দাবি, অগ্নিকাণ্ডের সময় প্রাণে বাঁচানোর আর্তি জানিয়ে অনেকেই ফোন করেন আনারুলকে। কিন্তু অভিযোগ, তিনি সাড়া দেননি। এমনকি স্থানীয় থানাতেও তিনি বিষয়টি জানাননি। এর পিছনে আনারুলের কী স্বার্থ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সে কারণে তাঁকে গ্রেফতারের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।