প্রতীকী ছবি।
ভোট হওয়ার আগেই জেলার দুই পুরসভা চলে গিয়েছে শাসকদলের ঝুলিতে। বাকি তিন পুরসভাতেও সব আসনে প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এর মধ্যে বোলপুর পুরভোটে কোনও আসনেই প্রার্থী দিতে পারল না বিজেপি! অথচ গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের মধ্যেও বোলপুর শহরে শাসকদলের চেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তাদের দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণেই প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা করতে পারেননি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
২২ ওয়ার্ডের বোলপুর পুরসভায় বিজেপি-র তিন জন প্রর্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। পরে স্ক্রুটিনিতে দু’টি ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। টিকে ছিলেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির প্রার্থী। তিনিও শেষ পর্যন্ত থাকবেন কি না, তা নিয়ে বিজেপি-র অন্দরেই ধোঁয়াশা ছিল। হলও ঠিক তাই। ফর্ম ৭ প্রকাশের পরে দেখা গিয়েছে, ওই প্রার্থীও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অর্থাৎ, বোলপুর পুরভোটে ২২ ওয়ার্ডেই এ বার বিজেপি-র এক জন প্রার্থীও লড়াইয়ে থাকলেন না। শুধু তাই নয়, ১০টি ওয়ার্ডে এক জনও বিরোধী প্রার্থী না-থাকায় সেগুলি ভোটের আগেই পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল।
লোকসভা ও বিধানসভা, দুই নির্বাচনেই ফলের নিরিখে বোলপুর শহরে এগিয়ে থাকা বিজেপি-র কেন এই হাল?
বিনাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক বিজেপি নেতার মনে, একে সংগঠন দুর্বল, তার উপরে জনসংযোগের অভাবেই বিজেপি দাঁত ফোটাতে ব্যর্থ। নিচুতলার কর্মীরাই বলছেন, বুথস্তরে সংগঠন না থাকায় তৃণমূলের সঙ্গে এঁটে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া, জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব ‘বিপদ’-এর সময় কর্মীদের পাশেও থাকছেন না। ফলে, কর্মীরা মনোবল হারাচ্ছেন। সে কারণেই তিন জনের বেশি মনোনয়ন দিতে পারেননি। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অষ্টম মণ্ডলের বক্তব্য, “আমরা সবাই এক সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু, তৃণমূলের বাহিনী যে ভাবে আমাদের দোকানঘরে বন্ধ করে রেখে দিয়েছিল, তাতে মনোয়ন জমা দেব কী করে?’’ তাঁর আরও অভিযোগ, এর পরেও যাঁরা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের বাড়িতে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ফলে একমাত্র প্রার্থীও মনোনয়ন তুলে নেন।
বিজেপি-র অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা বোলপুর পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের আহ্বায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “আমরা তো চেয়েছিলাম, ওরা প্রার্থী দিক। কিন্তু, বিজেপি নিজেই যদি প্রার্থী না দিতে পারে, বা প্রার্থীকে ধরে রাখতে না পারে, সে দায় কি আমাদের!”