‘লকডাউন’ চালুর পরেও দোকান খোলায় বন্ধের নির্দেশ। বিষ্ণুপুরের মটুকগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’-এর দ্বিতীয় দিন, মঙ্গলবার পুরুলিয়া ও আদ্রায় কার্যত বন্ধের চেহারা নিল। সকাল থেকেই রাস্তাঘাট ছিল শুনশান। মাঝেমধ্যে পুলিশের টহল ছাড়া, সে ভাবে লোকজন চোখে পড়েনি। তবে কিছু জায়গায় ‘লকডাউন’ ভেঙে পথে বার হওয়া লোকজনের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ‘লকডাউন’ ভাঙার অভিযোগে এ দিন বিকেল পর্যন্ত পুরুলিয়া শহরে চার জন ও আদ্রায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিন বেলার দিকে আদ্রায় টহলে বেরোন পুরুলিয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিনাকী দত্ত, এসডিপিও (রঘুনাথপুর) দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায়, সিআই (কাশীপুর) রজতকান্তি পাল ও আদ্রার ওসি সুদীপ হাজরা। তাঁদের সামনে পড়েন কয়েকজন মোটরবাইক চালক। তবে সকলেই জানান তাঁরা রেলকর্মী। অফিসের কাজে বেরিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তাঁদের পরিচয়পত্র দেখার পরে পুলিশ আধিকারিকেরা নিশ্চিত হন।
অন্য দিকে, এ দিন সকালে পুরুলিয়া শহরের হাটের মোড় এলাকায় ‘নাকা চেকিং’ শুরু করে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। কয়েকজন বিনা কারণে বাইরে বেরিয়েছেন দেখার পরে তাঁদের আটক করা হয়। তাঁদের কেউ দাবি করেন, বাড়িতে আনাজ ফুরিয়ে গিয়েছে, তাই ব্যাগ নিয়ে বাজার করতে বেরিয়েছেন। কেউ বা দাবি করেন, পানীয় জল কিনতে বেরিয়েছেন। যাঁরা ওষুধ কিনতে বেরিয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন, তাঁদের কাছে পুলিশ কর্মীরা ‘প্রেসক্রিপশন’ দেখতে চান। সকাল সাড়ে ৯টা-১০টা পর্যন্ত ইতিউতি এ রকম কিছু লোকজন দেখা গেলেও, বেলা বাড়তেই পথঘাট শুনশান হয়ে যায়।
পুরুলিয়াতে করোনা-সংক্রমণ বাড়ার জন্য পুরুলিয়া শহর ও রেল-শহর আদ্রায় সোমবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের কর্তাদের মতে, দুই শহরে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার ঘটনায় বাসিন্দারা কিছুটা আতঙ্কিত হয়েছেন। তাই ‘লকডাউন’ ভেঙে বাইরে বেরনোর ঝুঁকি নেননি।
এরই মধ্যে আদ্রায় আরও চার জনের করোনা ধরা পড়েছে। ফলে, রেল-শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে নয়। বিডিও (কাশীপুর) সুদেষ্ণা দে মৈত্র এ দিন বলেন, ‘‘সোমবার রাতে আদ্রার চার জনের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। তাঁরা সকলেই চিলড্রেন্স পার্ক এলাকার বাসিন্দা। করোনায়-আক্রান্ত এক রেলকর্মীর পরিবারের লোকজন। ওই এলাকা আগেই কনটেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে।’’ তবে প্রশাসনকে স্বস্তি দিয়েছে গত কয়েকদিন আদ্রাতে করোনা-আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকজনদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রায় কুড়ি জন বাসিন্দার রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)