বিষ্ণুপুরে এসডিও। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’ চলাকালীন রেশন পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। তবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ নির্বিঘ্নে কাটলেও ১০ তারিখের পরে, খাদ্য-কুপন নিয়ে হাজির হওয়া উপভোক্তাদের কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে উদ্বেগে রেশন ডিলারদের একাংশ। এর পাশাপাশি, কার্ড থাকা সত্ত্বেও রেশন না পাওয়া, কুপন না মেলা, নির্দেশিকা নিয়ে বিভ্রান্তির কারণেও সমস্যা বাড়ছে।
কার্ড-সমস্যা, রেশন সংক্রান্ত নতুন নির্দেশিকা ঘিরে কয়েক দিন ঘরেই বাঁকুড়ার বিভিন্ন ব্লকে সমস্যা বেড়েছে। কোথাও কোথাও গ্রাহকদের বিক্ষোভও নজরে এসেছে। সমস্যা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমার বিভিন্ন রেশন দোকানে ঘোরেন ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।
বিষ্ণুপুর শহরে যান মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল, বিডিও (বিষ্ণুপুর) স্নেহাশিস দত্ত প্রমুখ। বাঁকুড়া সদর মহকুমার বিভিন্ন রেশন দোকানেও পরিদর্শনে যান সরকারি আধিকারিকেরা। বিভিন্ন ব্লকের বিডিও ও মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) সুদীপ্ত দাসও পরিদর্শনে ছিলেন। ইন্দাসের রেশন দোকানগুলিতে পর্যবেক্ষণে যান বিডিও মানসী ভদ্র চক্রবর্তী। বড়জোড়া এলাকার রেশন দোকানগুলিতে ঘোরেন বিডিও ভাস্কর রায়ও।
রেশন ডিলার ও সাধারণের সঙ্গে কথা বলে বেশ কিছু সমস্যার কথা সামনে এসেছে। প্রথমত, এমন অনেক গ্রাহক আছেন, যাঁদের রেশন কার্ড থাকলেও তা ডিলারের কাছে নথিভুক্ত নেই। ফলে, তাঁরা রেশন পাচ্ছেন না। দ্বিতীয়ত, অনেক গ্রাহকই সরকারি নির্দেশিকার কথা বলে পাঁচ কিলোগ্রাম করে চাল দাবি করছেন। নির্দেশিকা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির জেরে এমন হচ্ছে বলে মত ডিলারদের একাংশের। এর পাশাপাশি, এখনও অনেকে কুপন পাননি বলেও অভিযোগ।
বিষ্ণুপুর ব্লকে ৪৬টি রেশন দোকানে মোট সাড়ে ১১ হাজার গ্রাহকের রেশন কার্ডের সমস্যা ছিল। তাঁদের মধ্যে সাড়ে ন’হাজার গ্রাহককে খাদ্য-কুপন দেওয়া হয়েছে। বাকিদের কাছে দু’-এক দিনের মধ্যেই কুপন পৌঁছে যাবে বলে ব্লক খাদ্য দফতর সূত্রের দাবি।
অন্য দিকে, অনেক রেশন ডিলার সময়মতো রেশনের জিনিস না আসা নিয়েও চিন্তিত। যদিও রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের বিষ্ণুপুর থানা কমিটির সম্পাদক মধুসূদন সাহার বক্তব্য, “মহকুমা খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবারের মধ্যে সব মাল চলে আসবে।”
এই পরিস্থিতিতে সব চেয়ে আতান্তরে পড়েছেন কার্ড থাকা সত্ত্বেও যাঁদের কোথাও তা নথিভুক্ত করা নেই। কুপন কে পাবেন আর কে পাবেন না, তা নিয়েও বিভ্রান্তির শেষ নেই। বিষ্ণুপুর মহকুমা খাদ্য নিয়ামক দেবজ্যোতি তালুকদার যদিও বলেন, “খাদ্য-কুপন পাওয়া গ্রাহক আর অনলাইনে তালিকাভুক্ত নয়, এমন গ্রাহক একই নয়। আলাদা ‘ক্যাম্প’ করে যাঁদের ‘অনলাইন’ গ্রাহক হিসেবে নথিভুক্তি হয়েছে কিন্তু কার্ড পাননি এখনও, তাঁদেরই কুপন
দেওয়া হয়েছে।”
তবে যাঁদের কার্ড হাতে রয়েছে অথচ ‘অনলাইন পোর্টাল’-এ নাম নথিভুক্ত নেই, তাঁদের এখনই পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।