চেনা ছবি। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’-এর পরে ‘আনলক’- পর্ব শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে অনেক কিছু ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। খুলেছে দোকানপাট, রাস্তায় গড়াতে শুরু করেছে গাড়ির চাকা। সেই সঙ্গেই কিছু দিনের জন্য উধাও হয়ে যাওয়া যানজটও ফিরে এসেছে পুরুলিয়ার ঝালদা শহরে। ফলে, মানুষজনকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ ঝালদা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে দেখা গেল, দুই সিভিক ভলান্টিয়ার গলদঘর্ম হয়ে লাঠি উঁচিয়ে যানজট কাটানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। পাশ থেকে এক দোকানদারের আক্ষেপ, ‘‘এই সমস্যা থেকে কবে মুক্তি মিলবে কে জানে!’’
বাসিন্দাদের কথায়, করোনা-আবহে লকডাউনের জন্য গাড়ির যাতায়াত বন্ধ থাকায় কিছু দিন যানজট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন সবাই। গাড়ি প্রায় আগের মতো চলতে শুরু করায় যানজট সমস্যাও মাথাচাড়া দিয়েছে।
এ দিন বাজার থেকে আনাজ কিনে বাড়ি ফিরছিলেন শহরের বাসিন্দা তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘ব্লক সদর থেকে মহকুমা সদর হলেও সুপ্রাচীন এই শহরে পুরসভা আজও কোনও স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড তৈরি করতে পারল না। রাস্তার পাশেই বাস দাঁড়িয়ে থাকছে। তাতে যানজট আরও বাড়ছে। ব্যস্ততম এই শহরকে যানজট মুক্ত করতে হলে বাসস্ট্যান্ড ও বাইপাস করা ভীষণ জরুরি।’’
যানজট সমস্যা মেটাতে প্রশাসন কী ভাবছে? এসডিও (ঝালদা) সুশান্ত ভক্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড তৈরির জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সবুজ সঙ্কেত এলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’
ঝালদার পুরপ্রশাসক তথা বিদায়ী পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের বক্তব্য, ‘‘স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড তৈরির জন্য শহরের বীরসা মোড়ের সামনে একটা জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছিল। শুনেছি, শহরে বাসস্ট্যান্ড এবং বাইপাস তৈরির জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজ্যের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তার পরে কী হয়েছে, জানি না। খোঁজ নেব।’’
ঝালদার অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ড পেরিয়ে প্রায়ই অ্যাম্বুল্যান্সে রোগী নিয়ে যাতায়াত করেন চালক গৌতম মাহাতো। বিরক্তির সুরে তিনি বলেন, ‘‘এমন খুব কম দিনই দেখেছি, যে দিন বাসস্ট্যান্ডে যানজট নেই। এ বার অন্তত এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।’’
তাঁর মতোই যানজট নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে পুলিশ ও ঝালদার দমকল কর্মীদেরও। এক দমকল কর্মীর কথায়, ‘‘কোনও দিন এমন যেন না হয় যে কোথাও দুর্ঘটনা ঘটল, আর খবর পেয়েও যানজটের গেরোয় আমরা সেখানে ঠিক সময়ে পৌঁছতেই পারলাম না!’’