প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার সকালে সংসদ ভবনের বাইরে। ছবি: সংগৃহীত।
ফের কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলিকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। তার আগে সংসদ ভবনের বাইরে বক্তৃতা করেন তিনি। নিজের বক্তব্যে শীতকালীন অধিবেশনের গুরুত্ব তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “২০২৪ সালে এটাই সংসদের শেষ অধিবেশন।” সব সাংসদকে এই অধিবেশনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তার পরেই প্রথমে নাম না-করে, তার পর নাম করেই বিরোধীদের তোপ দাগেন মোদী। বলেন, “সংসদে সাংসদদের বলার অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন কয়েক জন। এঁরাই সংসদে হাঙ্গামা বাধাচ্ছেন। ফলে বলার সুযোগ পাচ্ছেন না নতুন সাংসদেরা। সংসদের নিয়ন্ত্রণ এই সাংসদেরা হাতে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।” নাম না-করলেও স্পষ্ট যে, মোদী বিরোধী সাংসদদের দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন।
পরে অবশ্য নাম করেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সংসদে জনগণের স্বার্থে কিছু বলেন না বিরোধীরা। মানুষ তাদের (বিরোধীদের) বার বার প্রত্যাখ্যান করছেন। গণতন্ত্রের শর্তই হল আমরা মানুষের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাব এবং তাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করব।” মোদী অবশ্য বিরোধী সাংসদদের একাংশের প্রশংসাও করেছেন। তিনি বলেন, “বিরোধী সাংসদদের কেউ কেউ সংসদে দায়িত্বশীল আচরণ করেন। তাঁরা চান সংসদের কাজ মসৃণ ভাবে পরিচালিত হোক। কিন্তু যাঁরা মানুষের দ্বারা বার বার প্রত্যাখ্যাত, তাঁরা সঙ্গীদের বক্তব্যও উপেক্ষা করেন।” মনে করা হচ্ছে, এই মন্তব্য করে বিরোধী জোটে ফাটল ধরাতে চেয়েছেন মোদী। মূলত কংগ্রেসকে আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু করে ছাড় দিতে চেয়েছেন বিরোধী জোটে থাকা শরিক দলগুলিকে।
আদানি ‘ঘুষ’ বিতর্ক, ওয়াকফ বিল এবং মণিপুর সঙ্কট— এই তিন বিষয় নিয়ে শীত অধিবেশনে ঝড় তোলার পরিকল্পনা করেছে বিরোধী দলগুলি। বিরোধীরা ঝাড়খণ্ড নিজেদের দখলে রাখলেও মহারাষ্ট্র জিতে বেশি চাঙ্গা বিজেপি এবং তার নেতৃত্বাধীন এনডিএ শিবির। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে গৌতম আদানিকে ঘিরে যে ঝড়ের পূর্বাভাস, তাকে প্রতিহত করার যুদ্ধে বিজেপিকে ‘বিরাট’ মানসিক জোর জোগাচ্ছে মরাঠাভূমের ‘বিরাট’ জয়।
এখনও পর্যন্ত সরকারপক্ষের যা সিদ্ধান্ত, তাতে ১৫টি বিল আনা হতে পারে লোকসভার চলতি অধিবেশনে। যদিও সব চেয়ে বেশি উত্তাপ ছড়াবে ওয়াকফ আইন সংশোধনী বিল। ওয়াকফ বা মণিপুরের মতো বিষয় থাকলেও, অধিবেশনের শুরু থেকে বিরোধীরা বেশি চাপ তৈরি করতে চলেছেন আদানির ‘ঘুষকাণ্ড’ নিয়েই। ঝোড়ো অধিবেশনের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে রবিবারের সর্বদলীয় বৈঠকও।