West Bengal Lockdown

হাতখরচের টাকা বাঁচিয়ে খাদ্য বিলি ১৫০ পরিবারে

গত ১০ এপ্রিল ওই ছাত্রেরা ঠিক করেন,তাঁদের হাতখরচের টাকা বাঁচিয়ে তা দিয়ে খাদ্যসামগ্রী কিনে পৌঁছে দেবেন কিছু দরিদ্র পরিবারের কাছে।

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০০:০৬
Share:

সাহায্য: বিলি করার আগে প্যাকেট করে রাখা হয়েছে খাদ্যসামগ্রী। নিজস্ব চিত্র

লকডাউন পরিস্থিতি দিনমজুর ও আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলি দু’বেলা অন্ন জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে। তেমনই অনেকগুলি পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন বোলপুরের কয়েক জন ছাত্র। তাঁদের কেউ বিশ্বভারতীর, কেউ বা বোলপুর কলেজে পড়েন।

Advertisement

গত ১০ এপ্রিল ওই ছাত্রেরা ঠিক করেন,তাঁদের হাতখরচের টাকা বাঁচিয়ে তা দিয়ে খাদ্যসামগ্রী কিনে পৌঁছে দেবেন কিছু দরিদ্র পরিবারের কাছে। প্রথম দিকে তাঁদের এই উদ্যোগ বোলপুরের ভুবনডাঙার ৫০টি পরিবারের জন্য হলেও, পরবর্তীতে তা ওই গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। তাঁদের আরও বন্ধু এগিয়ে আসে এই উদ্যোগে শামিল হতে। যার ফলে ভুবনডাঙা ছাড়িয়ে এই ত্রাণ পৌঁছে যায় কালিকাপুর, জামবুনি, লজ মোড় এলাকার প্রায় ১৫০ পরিবারের কাছে।

ছাত্রদের পক্ষ থেকে বিশ্বভারতীর সদস্য প্রাক্তনী শিবনাথ ঘোষ জানান, তাঁদের দেওয়া ত্রাণে আছে চাল, আলু, মুড়ি, নুন, সয়াবিন,সাবান ও বিস্কুট। ১৮ এপ্রিল ৫০টি পরিবারের কাছে তাঁরা খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন। পরবর্তীতে ১৯ ও ২০ এপ্রিল ত্রাণ পৌঁছয় আরও ১০০টি পরিবারের কাছে। শিবনাথ বলেন, “নিজেদের সামান্য উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়ে যদি এক জনেরও উপকার করা যায়,সেই ভাবনা থেকেই আমাদের এই উদ্যোগ। কিন্তু আরও অনেকের সহযোগিতায় আজ আমরা অনেকের কাছে পৌঁছতে পেরেছি। আশা করি ভবিষ্যতেও এ ভাবে ত্রাণসামগ্রী তুলে দিতে পারব।’’

Advertisement

ছাত্রেরা যখন নিজেদের উদ্যোগে ত্রাণ পৌঁছচ্ছেন, তখন পিতৃশোক বুকে চেপে বিশ্বভারতী ইউনিভার্সিটি ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের (ভিবিইউএফএ) তরফে থেকে হওয়া ত্রাণ বিলির সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক বিশ্বজিৎ হালদার। তাঁর পিতৃবিয়োগ হয় গত ৮ এপ্রিল। লকডাউনের মাঝে প্রয়োজনীয় ক্রিয়াকর্ম চলাকালীনই ১১,১২,১৫ এবং ১৬ এপ্রিল যে চার দফায় ত্রাণ সামগ্রী বিলি করা হয়, প্রতি ক্ষেত্রেই তার পুরোভাগে ছিলেন বিশ্বজিৎবাবু। ত্রাণ সামগ্রী প্যাকেট করা, খালি গায়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে তা বিলি করা, সমস্ত হিসাব রক্ষার দায়িত্ব তাঁরই কাঁধে। বিশ্বজিৎবাবুর কথায়, “ব্যক্তিগত দুঃখ ব্যক্তিগতই থাক। যে কাজ দায়িত্ব নিয়ে শুরু করেছি, তা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে চাই।“

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement