প্রতীকী ছবি।
দোকান খোলা হবে কি না তা নিয়ে বীরভূমের সর্বত্রই ব্যবসায়ীরা এখনও ধোঁয়াশায়। এই জেলা কোন জোনের আওতায় এবং দোকান খোলার ক্ষেত্রে কোন নিয়ম মানা হবে তা নিয়ে দোটানায় পড়েছেন জেলার ব্যবসায়ীরা। গ্রিন জোনে প্রায় সব কিছু ছাড় দেওয়ার ঘোষণা হলেও অরেঞ্জ জোনে সেই ছাড় অনেকটাই সীমিত। বীরভূম জেলা গ্রিন না অরেঞ্জ জোনে প্রশ্ন তা নিয়েও। কারণ, এ যাবত জেলায় একটি সংক্রমণ না থাকলেও ৩০ এপ্রিল জেলার তিন বাসিন্দার করোনা ধরা পড়েছে। এখন তাঁরা দুর্গাপুরে চিকিৎসাধীন।
কিছু ব্যবসায়ী মনে করছেন, স্থানীয় প্রশাসনের তরফে যেহেতু কোনও নির্দেশ মেলেনি তাই গ্রিন জোনের ছাড়ের তালিকায় থাকা দোকান খুলে জটিলতা না বাড়ানোই ভাল। কিন্তু শহরের বাইরে বা শহরের মধ্যেও ছোট দোকানদারদের অনেকেই সেই সচেতনতা নেই। তাই প্রশাসনের তরফে যেহেতু রবিবার পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু ঘোষণা করা হয়নি তাই অনেকেই হয়তো দোকান খুলে ফেলবেন। দোকান খোলা নিয়ে বিভ্রান্তির কথা মানছেন বাসিন্দারাও। সিউড়ির এক পান বিক্রেতা বলেন, ‘‘দোকান খোলা হবে এমন ইঙ্গিতই ছিল। এখন বুঝতে পারছি না। কেউ সঠিক বলতেও পারছে না। বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া তো স্বাভাবিক।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, হটস্পট বা কনটেনমেন্ট জোন নয় এমন এলাকায় শুধু অত্যাবশকীয় পণ্যের দোকান নয়, খুলবে শপস অ্যান্ড এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট’-এ নথিভুক্ত সব দোকান। এ কথা ২৪ এপ্রিল মাঝ রাতে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই নির্দেশের পরিমার্জনও হয়েছে। কোথায় কি ধরনের ছাড় দেওয়া হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে তা কার্যকর করা বা নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। তাই রাজ্য সরকারের সম্মতি জরুরি।
রাজ্য সরকারও দিন চারেক আগে অর্থনৈতিক গতি সচল রাখতে সেই ছাড় বলবত করার কথা ঘোষণা করে। যদিও সংক্রমণের নিরিখে চিহ্নিত জোনে কি কি ক্ষেত্রে ছাড় থাকবে সে ব্যাপারে গাইডলাইন ঘোষণা এখনও বাকি। রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছ থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশও পৌঁছয়নি। তাই দোটানা তৈরি হয়েছে।
সিউড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কিসান পাল বলেন, ‘‘সোমবার অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের আওতার বাইরে থাকা দোকান খালার বিষয়ে জানতেই শনিবার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে কোনও দিশা মেলেনি। শুধু স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল। সদুত্তর মেলেনি সেখানেও। তাই আর ঝুঁকি নেব না।’’ ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘‘কেন্দ্রের ঘোষণার পর দোকান খুলে পুলিশ প্রশাসনের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল জেলার অনেক ব্যবসায়ীকে। এই বিভ্রান্তি এখনও জিইয়ে গোটা জেলা জুড়ে। কি করব কিছু বুঝতে পারছি না।’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য রবিবারই জানিয়েছেন, এখনও নির্দিষ্ট কোনও নির্দেশ নবান্ন থেকে আসেনি। তাই যেমন চলছে তেমনই চলবে।