গ্রাম রুখে পাহারা পুলিশের। নিজস্ব চিত্র
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় অন্য গ্রাম থেকে নানুরের একটি গ্রামকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হল। এলাকায় বাড়ানো হল কড়া পুলিশি প্রহরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের সালার থানা এলাকার ক্যানসার আক্রান্ত এক বৃদ্ধকে ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই বৃদ্ধের এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে নানুরের ওই গ্রামে। সেই মেয়ে ও তাঁর স্বামী ওই বৃদ্ধের কাছে ছিলেন। তাঁর মেয়ে একবেলার জন্য শ্বশুরবাড়িতে আসেন। টোটোতে করে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে টাকাও তোলেন। বৃদ্ধের করোনা ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসন ওই তরুণীর পরিবারের ১১ জন-সহ মোট ১৫ জনকে নিভৃতবাসে পাঠায়। বহিরাগতদের প্রবেশ রুখতে স্থানীয় গ্রামগুলিতে বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেন গ্রামবাসীরা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে ওই গ্রামটি অন্য গ্রাম থেকে অনির্দিষ্টলের জন্য বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে প্রশাসন। গ্রামে ঢোকার দুটি রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে বসানো হয়েছে কড়া পুলিশি প্রহরা। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের বাইরে বেরনো ও বহিরাগতদের গ্রামে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ওই বৃদ্ধের মেয়ের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতা পাঠানো হয়েছে। করোনা পজিটিভ হলে নিভৃতবাসে থাকা বাকিদের রক্তের নমুনাও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে চারশোরও বেশি পরিবারের বাস। লোকসংখ্যা ২ হাজারের বেশি। গ্রামে মাঝারি মুদিখানার দোকান রয়েছে ৭টি। তাদেরই একজন আব্দুল আলিম সেখ বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে আমাদের কাছে যা মালপত্র রয়েছে তাতে টেনেটুনে দিন পাঁচেক চলবে। তার মধ্যে বাইরে থেকে মাল আনতে না পারলে খুব বিপাকে পড়ে যাব।’’ ফিরদৌস শেখ, লালচাঁদ শেখ বলেন, ‘‘শুধু তো মুদিখানাই নয়, আনাজ, ওষুধ, শিশুখাদ্যও রয়েছে। যোগান অব্যাহত না থাকলে সমস্যায় পড়তে হবে।’’ দুলাল সেখ, কচি সেখরা বলেন, ‘‘খুব দুশ্চিন্তায় আছি। কী হবে কে জানে!’’
নানুরের বিডিও অরূপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। গ্রামে যা খাদ্যশস্য মজুত আছে তাতে কয়েকদিন চলে যাবে। পুলিশ প্রশাসনের ফোন নম্বর গ্রামবাসীদের দেওয়া আছে। ফোন করলেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’