প্রতীকী চিত্র
যাঁদের ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই, কুপনও পাননি কিন্তু পুরনো রেশন কার্ড রয়েছে আবেদনের ভিত্তিতে এ বার তাঁদেরই কুপন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। উদ্দেশ্য, লকডাউন পরিস্থিতিতে ওই পরিবারগুলি যাতে খাদ্য সঙ্কটে না পড়ে। খাদ্য ও সরবরাহ দফতর সূত্রে তেমনটাই খবর। জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্য থেকে জেলায় নির্দেশ পৌঁছেছে। খুব শ্রীঘ্রই আবেদন আহ্বান করা হবে।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে জেলার প্রতিটি ব্লক অফিস ও পুরসভা এই আবেদন গ্রহণ করবে। ঠিক কী ভাবে আবেদন গ্রহণ হবে সেটা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে যেটা জানা গিয়েছে, আবেদনকারীকে আধার, ভোটার কার্ডের পাশাপাশি দিতে হবে সংশ্লিষ্ট পুরনো রেশন কার্ডের প্রতিলিপি। তবে, বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনের আশঙ্কা আবেদনকে ঘিরে ফের ভিড় বাড়বে। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেই পারস্পরিক দূরত্ববিধি তখন কতটা বজায় রাখা সম্ভব সেই সংশয় থেকে যাচ্ছে।
করোনা মোকাবিলায় লকডাউনে প্রায় সব কাজকর্ম, রোজগার বন্ধ। এতেই বিপাকে পড়েছেন সমাজের বড় অংশের মানুষ। বিশেষ করে দিন আনি দিন খাই পরিবারগুলি। এই অবস্থায় যাতে খাদ্য সঙ্কট না হয় তার জন্য আগামী ৬ মাস বিনামূল্যে (আরএসকেওয়াই ২ ক্যাটেগরির কার্ড হোল্ডার বাদে) সকল ডিজিটাল রেশনকার্ড হোল্ডারদের রেশন সামগ্রী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ১ এপ্রিল থেকে রেশন বিলি শুরু হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনা বা এনএফএসএম চালুর পর আর্থিক অবস্থা অনুসারে ফের তিন ধরনের কার্ড দেওয়া হয়েছে। প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড (পিএইচএইচ), সুগার প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড (এসপিএইচএইচ) ও অন্ত্যোদয় অন্ন-যোজনা (এএওয়াই)। কিন্তু জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা তালিকায় এমন অনেক মানুষের নাম বাদ ছিল যাঁরা সত্যিই খাদ্য সুরক্ষার আওতায় সুযোগ পেতে পারতেন। তাঁদের সকলেকে প্রকল্পের সুবিধা দিতে রাজ্য সরকার রাজ্য খাদ্য প্রকল্প, খাদ্যসাথী নিয়ে আসে। রাজ্যের সেই যোজনায় কার্ড দু’ধরনের। রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা ১ ও আরকেএসওয়াই ২। এ ছাড়া জঙ্গলমহল এলাকায় আদিবাসীদের জন্য স্পেশ্যাল বিপিএল কার্ড ইস্যু হয়। সব মিলিয়ে জেলায় জিডিটাল রেশন কার্ড ছিল ৪০ লক্ষ ৩হাজার ১০২টি।
তারপরেও সমস্যা মেটেনি। অনেক গরিব মানুষ আরকেএসওয়াই ১-এর বদলে আরকেএসওয়াই ২ কার্ড পেয়েছিলেন। অনেকে কার্ড পাননি। সমস্যা মেটাতে গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরে ব্লক ও পুরসভায় শিবির করে গ্রাহকদের কাছে আবেদন চাওয়া হয়। কার্ডের গোত্র পরিবর্তনের আবেদনের সঙ্গে নতুন পরিবারের অন্তর্ভুক্তির জন্য বহু আবেদন জমা পড়ে। আবেদন করেছিলেন, অনুমোদন মিলেছিল অথচ এপ্রিলের ১ তারিখ পর্যন্ত রেশন কার্ড হাতে পাননি, এমন ২ লক্ষ ৫৭ হাজার ১৮৬ জনকে ইতিমধ্যেই কুপন দিয়েছে খাদ্য ও সরবরাহ দফতর।
তারপরও কিছু পরিবার থেকে গিয়েছিল, যাঁদের হাতে ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই, অথবা গত বছর কোনও আবেদন করেননি। এলাকায় না থাকার জন্য সে কথা জানতেই পারেননি অনেকে। কিন্তু তাঁদের কাছে পুরনো রেশন কার্ড থাকলেও রেশনে কোনও জিনিস পাচ্ছিলেন না। সরকারের নির্দেশ এ বার তাঁদেরই সুবিধা দিতে চলেছে খাদ্য ও সরবরাহ দফতর।