তাঁত বুনছেন বাবা। পাশে মৌমিতা। কড়িধ্যার বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
বাবার অল্প রোজগার। ঠিকমতো পাঠ্যবইই মিলত না। এর মাঝেও উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৮৩ (৯৬.৬%) নম্বর পেয়েছেন কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনের ছাত্রী মৌমিতা কুণ্ডু। জেলার মেধা তালিকায় তাঁর স্থান ষষ্ঠ। তবে এর পরেও ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় মৌমিতা।
মৌমিতা বলেন, “পরিবার, শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় এই ফল হয়েছে। আগামী দিনে বাংলা নিয়ে পড়া, গবেষণা ও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর ইচ্ছা আছে।” তাঁর বাবা সুকুমার কুণ্ডু কালীপুর রেশম শিল্প সমবায় সমিতির অধীনে তসরের কাপড় বোনেন। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ। মাসের শেষে মেরেকেটে ৪,০০০-৪,৫০০ টাকা রোজগার। মেয়ের ফল দেখে তাই আনন্দের পাশাপাশি শঙ্কিতও বাবা। এই স্বল্প রোজগারে ভবিষ্যতে মেয়ের পড়াশোনার খরচ কী ভাবে চালাবেন তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ তাঁর কপালে।
তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের শিক্ষকেরা বই দিয়ে সাহায্য করেছেন। সাহায্য করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। রাজ্য সরকারের নানা বৃত্তিও পেয়েছে। এক জন গৃহশিক্ষক ছিলেন। তাতেই ৪০০ টাকা খরচ হত। এর পরে অর্থের জোগান কোথা থেকে দেব জানি না। আশা করি, সহযোগিতা পাব।”
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক যামিনীকান্ত সাহা বলেন, “মৌমিতার প্রয়োজনে আমরা আগেও থেকেছি, ভবিষ্যতেও থাকব। আমাদের মতো গ্রামের স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়াই আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল পরিবার থেকেই আসে। মৌমিতার এই ফলাফল তাদের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।”