রঘুনাথপুর ২ ব্লকে দামোদরের তীরে করগালি ঘাট। —নিজস্ব চিত্র।
দামোদরের জলে মিলেছে ন্যাপথা। তাই রঘুনাথপুরের জলপ্রকল্পের জন্য জল তোলা হবে রঘুনাথপুর ২ ব্লকের দামোদরের করগালি ঘাটের চার কিলোমিটার দূরে নিতুড়িয়া ব্লকের পাঞ্চেত জলাধার থেকে। পুরসভা সূত্রের খবর, করগালি ঘাট এলাকার জলের নমুনা পরীক্ষার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জল পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছিল। পরীক্ষায় নমুনায় ন্যাপথা মেলার কথা জানানো হয়েছে রিপোর্টে। সে কারণেই পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, করগালি ঘাটে গরমে জল স্তর কমে যায়। জলের নমুনা সংগ্রহের সময় দেখা গিয়েছিল, ন্যূনতম সাড়ে তিন মিটার জলের গভীরতা ওই এলাকায় ছিল না।করগালির ঘাটের উল্টো দিকে ঝাড়খণ্ডের সিন্ধ্রি এলাকায় রসায়নিক সার তৈরির কারখানা ছিল।
পুরসভা মনে করছে, কারখানার বর্জ্য দমোদরে পড়ায় জলে ন্যাপথা মিলেছে। প্রকল্পের ‘নোডাল অফিসার’, পুরসভার বাস্তুকার বিজয় মণি জানান, পাঞ্চেত জলাধারে গ্রীষ্মে জলস্তর খুব একটা নামে না। ওই এলাকা থেকেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ইন্দো-জার্মান প্রকল্পের জন্য জল তোলে।
অনেক টালবাহানার পরে, রঘুনাথপুরকে অম্রুত ২ জলপ্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এতে রঘুনাথপুরে জল সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে বলে দাবি পুরসভার। সূত্রের খবর, ‘নাবার্ড’-এর তৈরি জলপ্রকল্পের খসড়া ‘ডিপিআর’ পুরসভা জমা দিয়েছে স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (সুডার) আম্রুত ২ ‘সেল’-এর কাছে। তা অনুমোদিত হলে চূড়ান্ত ডিপিআর তৈরি হবে বলে জানাচ্ছেন পুর-এলাকায় জল সরবরাহের দায়িত্বে থাকা পুরপ্রতিনিধি প্রণব দেওঘরিয়া।
তাঁর দাবি, ‘‘খসড়া ডিপিআর-এ ধরা হয়েছে, প্রকল্প গড়তে খরচ হবে ৮০ কোটি টাকা। ‘সুডা’ দ্রুত চূড়ান্ত ডিপিআর জমা করতে বলেছে।” পুরপ্রধান তরণী বাউরি জানান, ‘ডিপিআর’ তৈরির পরে দ্রুত দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
প্রকল্পের খসড়া ‘ডিপিআর’ অনুযায়ী, পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল তুলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে আনা হবে রঘুনাথপুর শহরে।
পুরসভার বাস্তুকার বিজয় জানান, প্রকল্প থেকে দিনে ১৩.৫ মিলিয়ন লিটার জল মিলবে। প্রণব বলেন, ‘‘শহরে জলের চাহিদা দৈনিক ছয় মিলিয়ন লিটার। উদ্বৃত্ত জল পুরসভার পাশে জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরীতে দেওয়া যাবে। তার বিনিময়ে পাওয়া অর্থে প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ হবে।”