টালি খসে ‘জখম’ রোগী

 নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে মাসআটেক আগে। এরই মধ্যে ‘সুপার স্পেশ্যালিটি’ হাসপাতালের দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে ভারী ‘টাইলস’। তা নিয়েই উদ্বিগ্ন রোগী ও তাঁদের পরিজন, চিকিৎসক— জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। এমনই কাণ্ড ঘটছে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৫
Share:

আতঙ্কে: দেওয়ালের টালি খসে পড়েছে পুরুষ ওয়ার্ডে। সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে মাসআটেক আগে। এরই মধ্যে ‘সুপার স্পেশ্যালিটি’ হাসপাতালের দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে ভারী ‘টাইলস’। তা নিয়েই উদ্বিগ্ন রোগী ও তাঁদের পরিজন, চিকিৎসক— জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। এমনই কাণ্ড ঘটছে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবার রাতে চার তলার পুরুষ ওয়ার্ডে দেওয়ালের টালি খসে সামান্য জখম হন এক রোগী। রবিবার সকালেও ওই ওয়ার্ডের করিডরে দেওয়াল থেকে টালি খসে পড়েছে। তা মেনেছেন জেলা হাসপাতালের সুপার শোভন দে। তিনি জানিয়েছেন, শুধু পুরুষ ওয়ার্ডই নয়, হাসপাতালের বিভিন্ন তলাতেই দেওয়াল থেকে টালি খসে পড়ছে। কয়েক মাস ধরেই এমন হচ্ছে। সিএমওএইচ এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে বিষয়টি চিঠিতে জানানো হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘কপাল ভাল, এখনও বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু যে কোনও মুহূর্তে ঘটতেই পারে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে ১০-তলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালটি তৈরি করা হয়েছিল। ৫০০-শয্যার হাসপাতাল তৈরিতে খরচ হয় ১০২ কোটি টাকা। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে রামপুরহাট ও সিউড়িতে দু’টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ভবনের উদ্বোধন করা হলেও তখনও পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। গত মে মাসে কাজ শেষ হওয়ার পর জেলা হাসপাতালের পুরানো ভবন থেকে প্রসূতি ও শিশু ওয়ার্ড ছাড়া প্রায় সব বিভাগ নতুন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

Advertisement

রোগী ও তাঁদের পরিজনদের একাংশের প্রশ্ন— এত টাকা খরচ করে যে হাসপাতাল তৈরি হয়েছে, নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দু’মাস কাটতে না কাটতেই সেটির দেওয়াল থেকে টালি খসে পড়তে শুরু করে। চিকিৎসক ও রোগীদের কয়েক জনের আশঙ্কা, পাঁচ বর্গফুটের ভারী টালি কারও উপর খসে পড়লে বড় বিপদ ঘটতে পারে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু টালি খসাই নয়, আরও সমস্যা রয়েছে নতুন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। তৈরির পর কয়েক মাসের মধ্যেই সেখানকার কয়েকটি বাতানুকূল যন্ত্র খারাপ হয়ে যায়। খসে পড়ে ফ্ললস্‌ সিলিং। তা ছাড়া ছাদের বিভিন্ন অংশ থেকে জল চুঁইয়ে পড়ে, নিকাশি ব্যবস্থাও ভাল নয়। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘নতুন ওই হাসপাতালে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যভবন সব জানে। নির্মাণকারী সংস্থাকে এ সব জানানো হয়েছে। ওরা কাজও করছে। কিন্তু সমস্যা মিটছে না।’’

রবিবার হাসপাতালের মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, বিভিন্ন দেওয়ালের টালি খসে পড়েছে। টালি খসে আহত রোগী অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। ওয়ার্ডের মধ্যেই একটি জায়গা ঘিরে খুলে যাওয়া টালি লাগানোর কাজ শুরু করেছে নির্মাণকারী সংস্থা। রোগীদের একাংশের বক্তব্য— বাইরে থেকে এত ঝাঁ-চকচকে হাসপাতাল । এক বছরও কাটেনি। এরই মধ্যে টালি খুলে পড়ছে! নির্মাণকারী সংস্থার এক আধিকারিককে ফোন করা হলেও, তিনি কোনও কথা বলেননি। সিউড়ি রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি উদ্বেগের। আমরা নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement