বিদ্যুত চক্রবর্তী এবং অমর্ত্য সেন। ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার বিনয় ভবনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আবার নাম না করে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের সমালোচনা করলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সমালোচনা থেকে বাদ গেলেন না বিশ্বভারতী শিক্ষক, আশ্রমিক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতারাও। উপাচার্যের এই মন্তব্য নিয়ে নিন্দার সরব হয়েছেন আশ্রমিক থেকে শুরু করে শিক্ষকেরা।
বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, বিনয়ভবনে মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি কয়েক ধরনের শকুনের প্রসঙ্গ আনেন। তাঁর মতে, ‘‘এক ধরনের শকুন আছেন যাঁরা শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত, যাঁরা শকুনের মতো উঁচুতে উঠে গিয়ে কী ভাবে বিশ্বভারতীকে অবমাননা করা যায় ,সেই কথায় তাঁরা ভাবেন। দ্বিতীয় ধরনের শকুন আছেন, যাঁরা নিজেকে আশ্রমিক বলে পরিচয় দেন।’’ উপাচার্যের অভিযোগ, ‘‘তাঁরা চেষ্টা করেন কী করে বিশ্বভারতীকে ভাগাড় তৈরি করা যায়।”
উপাচার্যের মতে, ‘‘তৃতীয় শকুন হচ্ছেন যাঁরা বিশ্বভারতী নিয়ে প্রচুর কথা বলেন বাইরে, যাঁরা বিদেশে থাকেন।’’ উপাচার্যের দাবি, ‘‘এই শকুনদের মধ্যে জমি হরফকারি আছেন।’’ উপাচার্যের অভিযোগ, ‘‘যাঁরা বিশ্বভারতীর অমঙ্গল চান, তাঁদের বিরুদ্ধে যখন আমরা আওয়াজ তুলি তখন পশ্চিমবঙ্গের অন্য যাঁরা শকুন আছেন তাঁরাও আমাদেরকে ছোবল মারে। এই ছোবল মারার ক্ষেত্রে তথাকথিত রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও আছেন।”
মঙ্গলবার নাম না করে অনুব্রত মণ্ডলকে কটাক্ষ করেও উপাচার্য বলেন, “আপনারা জানেন এই বোলপুর শহরে কী ধরনের শকুন ছিল। সেই শকুনগুলো কিন্তু আজকে জেলে গিয়েছে।’’ পাল্টা তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ধরনের উপাচার্য দেখিনি বিশ্বভারতীতে, যিনি সেখানকার সমস্ত ধরনের ঐতিহ্য একের পর এক ভেঙে চলেছেন।’’
এ নিয়ে আশ্রমিক তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোণার বলেন, “বিশ্বভারতীতে বহু উপাচার্য এসেছেন। কারও মুখে স্বাধীনতা দিবসের দিনে এ কথা শুনিনি। শুনে বড় খারাপ লাগছে।” আর এক আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “ উনি (উপাচার্য) নিজেকে রাবীন্দ্রিক নন বলে গর্ব বোধ করেন, সেটা তাঁর ভাষা থেকেই আজ প্রমাণ হচ্ছে। এর ফলে সব দিক থেকে বিশ্বভারতীর মানও আজ দিন দিন নামছে।”
অধ্যাপক ও বিশ্বভারতী শিক্ষক সংগঠনের সম্পাদক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোনও শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযোগ থাকলে উনি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন। কিন্তু এ ভাবে সমস্ত শিক্ষকদের অপমান করার অধিকার ওঁর নেই।’’