—নিজস্ব চিত্র।
ফের বিতর্কে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন পড়ুয়াকে তিন বছরের জন্য বরখাস্ত করলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তে প্রশ্নের মুখে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ভূমিকা। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পড়ুয়াদের একাংশ। বরখাস্ত হওয়া পড়ুয়াদের অভিযোগ, রাজনৈতিক ভাবে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যেই তাঁদের এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
রুপা চক্রবর্তী, ফাল্গুনী পান এবং সোমনাথ সৌ নামে তিন পড়য়াকে আগেই নিলম্বিত করা হয়েছিল। সোমবার তাঁদের নোটিস পাঠিয়ে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই তিন পড়ুয়াকেই বিশ্বভারতীতে বিভিন্ন আন্দোলনের পুরোভাগে দেখা গিয়েছে। বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের একাংশের দাবি, সে কারণেই তাঁদের বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া ছাত্র সোমনাথের দাবি, তাঁদের শায়েস্তা করার জন্য এই পদক্ষেপ করেছেন উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিটও দিতে পারেননি উপাচার্য বিদ্যৎ চক্রবর্তী। উপাচার্য যে বিজেপি-আরএসএসের ঘনিষ্ঠ, সেটা আমরা সকলেই জানি। এসএফআইয়ের সদস্য হওয়ায় আমাদের রাজনৈতিক ভাবে শায়েস্তা করলেন তিনি।’’
উপাচার্যের বিরুদ্ধে বড়সড় আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন সোমনাথ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এর বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন করব। আইনি লড়াইয়ের পথেও যাব। আইনজীবীর সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা হয়েছে। বিশ্বভারতীতে যে তাণ্ডবললীলা চলছে, তা যে ভাবে হোক বন্ধ করার পথে হাঁটব।’’
সোমবার নোটিস পাঠিয়ে তিন পড়য়াকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রসঙ্গত, বিশ্বভারতীর অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে এই তিন পড়ুয়াকে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি তিন মাসের জন্য সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরে তা ধাপে ধাপে বাড়িয়ে মোট ন’মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। সেই সাসপেনশন মেয়াদ চলাকালীন তিন বছরের জন্য বরখাস্ত করা হল এই তিন জনকে।
সূত্রের খবর, তিন পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি পীযুষ ঘোষ এবং অরণি চক্রবর্তী নামে দুই অধ্যাপককেও সাসপেন্ড করেছে বিশ্বভারতী। এই দুই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ ছিল। উপাচার্যের বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এই দু’জন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁদের বেআইনি ভাবে আটকে রাখার অভিযোগ করেছিলেন এই অধ্যাপকেরা। অনেকের মতে, থানায় অভিযোগের জেরেই শাস্তির মুখে পড়তে হল অধ্যাপকদের।