বর্ধমান জেলা আদালত। নিজস্ব চিত্র।
দ্বিতীয় পর্যায়ে দুয়ারে সরকার প্রকল্প চলছে রাজ্যে জুড়ে। এ বার বিচারব্যবস্থাকে দুয়ারে পৌঁছে দিতে চলেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এখন মাদক, পকসো, বিদ্যুৎচুরি ও সরকারি কর্মীর দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার আগাম জামিনের শুনানি হত জেলা আদালতে। এ বার হাই কোর্টের নির্দেশে মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকরা আগাম জামিনের আবেদন শুনতে পারবেন।
এ বিষয়ে গত বুধবার হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার মহম্মদ সাব্বর রশিদি একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন। তাতে দক্ষিণ দিনাজপুর ছাড়া রাজ্যের সব জেলা বিচারককে হাই কোর্টের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতদিন মহকুমা আদালতের দায়রা বিচারকরা মাদক, ইলেকট্রিসিটি, পকসো ও সরকারি কর্মীর দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার আগাম জামিনের আবেদন শুনতে পারতেন না। এ ধরনের মামলার আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি জেলা আদালতে হত। দূর-দূরান্ত থেকে বিচারপ্রার্থীদের জেলা আদালতে আসতে হত। এতে হয়রানির শিকার হতেন বিচারপ্রার্থীরা। এই ব্যবস্থা চালু হওয়ায় নিজের এলাকায় মহকুমা আদালতেই বিচারপ্রার্থীরা আগাম জামিনের আবেদন করতে পারবেন।
যদিও হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ছড়িয়েছে আইনজীবীদের মধ্যেই। বিভিন্ন জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা বলেন, ‘‘হাইকোর্ট এ ভাবে প্রশাসনিক নির্দেশিকা জারি করে আইন বদল করতে পারে না। সিআরপিসি-তে পরিষ্কার ভাবে এ ধরনের আবেদন কোন আদালতে করা যাবে তার উল্লেখ রয়েছে। প্রশাসনিক নির্দেশে সিআরপিসি-র বদল সম্ভব নয়। এই নির্দেশিকায় আমরা সন্তুষ্ট নই। প্রয়োজনে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করা হবে। এ ব্যাপারে আরও কয়েকটি বার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে।’’
আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘হাইকোর্টের এই নির্দেশিকায় জেলা আদালতের আইনজীবীরা সমস্যায় পড়বেন। করোনার কারণে আইনজীবীদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। তা ছাড়া মহকুমা আদালতগুলিতে একজন করে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক রয়েছেন। মহকুমা আদালতগুলিতেও মামলার চাপ রয়েছে। তার উপর নতুন করে আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি হলে বিচার গতি পাবে না। উল্টে থমকে যাবে।’’