এক ধাপ উন্নতি করে ৯৭ নম্বরে বিশ্বভারতী।
উন্নতি স্রেফ এক ধাপের! গতবার স্থান ছিল ৯৮। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে চলতি বছরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (এনআইআরএফ)-এর র্যাঙ্কিংয়ে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় এ বার ৯৭ তম স্থানে ঠাঁই হল বিশ্বভারতীর। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন হাল নিয়ে পড়ুয়া, প্রাক্তনী থেকে শুরু করে আশ্রমিক সকলেই একযোগে দায়ী করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। তবে এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষায় বিশ্বভারতীর ক্রম-অবনমন নিয়ে উপাচার্য-সব বর্তমান কর্তৃপক্ষ এমনিতেই যথেষ্ট সমালোচিত। মূলত সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, গবেষণার উৎকর্ষ কেমন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পেশাদারিত্ব রয়েছে, সমাজের সব স্তরের পড়ুয়াদের শিক্ষার মূলস্রোতে নিয়ে আসার চেষ্টায় কেমন ভূমিকা রয়েছে প্রতিষ্ঠানের, কর্মক্ষেত্রে প্রাক্তনীরা কতটা সফল—এমন নানা বিষয়কে মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্রমতালিকা প্রকাশিত করা হয়।
এক দশক আগে এই র্যাঙ্কিং অনুযায়ী বিশ্বভারতী ১১ নম্বরে ছিল। কিন্তু, গত কয়েক বছরে রাজ্যের এই একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবল অবনমন ঘটেছে। ২০২০ সালে ৫০ নম্বরে ছিল বিশ্বভারতী। পরের বছর অনেকটা নেমে হয় ৬৪। ২০২২-এ ৯৮ নম্বরে ঠাঁই হয়েছে বিশ্বভারতীর। অনেকেই আশা করেছিলেন, এ বছর অন্তত এনআইআরএফ র্যাঙ্কিংয়ে কিছুটা সম্মানজনক জায়গায় থাকবে বিশ্বভারতী। কিন্তু, সোমবার সেই তালিকা প্রকাশ হতে দেখা গেল উন্নতি হলেও তা হয়েছে মাত্র এক ধাপের! বিশ্ববিদ্যালয় সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি মিলিয়ে এ দিনই একটি ক্রমতালিকা প্রকাশ করেছে এনআইআরএফ। সেই তালিকাতেও একশোর মধ্যে স্থান হয়নি বিশ্বভারতীর।
বিশ্বভারতীর এমন হাল কেন, তা নিয়ে এ দিন ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, ‘‘এনআইআরএফ র্যাঙ্কিংয়ে ৮৬-তে রয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে বিশ্বভারতীর ৯৭। ভাবতেই দুঃখ হয়।’’ প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুরের মন্তব্য, “এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উপাচার্য রসাতলে নিয়ে গিয়েছেন। সেখানে এক বেড়েছে, এটাই আশ্চর্যের বিষয়।” কটাক্ষের আর এক আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “অনেক স্বপ্ন নিয়ে রবীন্দ্রনাথ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। সেই প্রতিষ্ঠান আজ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তবে আর যে অবনমন হয়নি, সেটাই বিরাট ব্যাপার।”
উপাচার্যকে সমালোচনা করেছে বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠন ভিবিইউএফএ। সংগঠনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘২০২২ ও ২০২৩-এ প্রায় এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। কোনও উন্নতি হয়নি। এই উপাচার্য না-যাওয়া পর্যন্ত বিশ্বভারতীর অবনমন থেকে নিস্তার নেই।’’ বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।