প্রচার: পদযাত্রায় বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা। শনিবার শান্তিনিকেতনে। ছবি: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়
কোনওটায় লেখা ‘মাননীয় উপরাষ্ট্রপতির আগমনকালে বিশ্বভারতীর পরিবেশ সুন্দর রাখুন’, কোনওটাতে আবার ‘বিশ্বভারতীর সৌন্দর্য বজায় রাখুন যাহাতে ন্যাকের মূল্যায়ন ভাল হয়’, কোথাও লেখা ‘বিশ্বভারতীর জমি ফিরিয়ে দিন’। এ ছাড়াও ‘জলের অপচয় বন্ধ করুন’, ‘যত্রতত্র ময়লা ফেলবেন না’, ‘আসুন সকলে মিলে বিশ্বভারতীর শিক্ষা-সংস্কৃতির মান বিশ্বের দরবারে তুলে ধরি’, ‘বিশ্বভারতীর শিক্ষা-সংস্কৃতি প্রসারে সকলে এগিয়ে আসুন’ জাতীয় একাধিক বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জনসচেতনতার কাজ করল বিশ্বভারতী পরিবার। প্ল্যাকার্ডগুলি হাতে ধরে ছিল বিশ্বভারতীর স্কুলস্তরের পড়ুয়ারা। এর আগে বিশ্বভারতী সংলগ্ন এলাকা প্লাস্টিকমুক্ত করার আবেদন নিয়ে পথে নেমেছিল পাঠভবনের পড়ুয়ারা।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১৬ অগস্ট পুনর্নির্মিত ‘শ্যামলী’ গৃহের উদ্বোধনে বিশ্বভারতীতে আসছেন ভারতের উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। এ ছাড়াও ২০২০ সালে ন্যাকের মূল্যায়নে প্রতিনিধি দল আসবে বিশ্বভারতীতে। আগের বার ন্যাক মূল্যায়নে বিশ্বভারতীর গ্রেড সন্তোষজনক ছিল না। এ বারে তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আগের বারের ন্যাকের মূল্যায়নের সময় ক্যাম্পাস সৌন্দর্যায়নে আমরা শূন্য পেয়েছিলাম। এ বারে গ্রেড বাড়াতেই হবে। কেননা গ্রেড খারাপ হওয়ায় অনেক সরকারি অনুদানের জন্যই আমরা আবেদন করতে পারি না।’’
বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস যেহেতু সর্বসাধারণের জন্য খোলা তাই তা সুন্দর, পরিচ্ছন্ন রাখার কিছুটা দায় স্থানীয়দেরও আছে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ ‘বিশ্বভারতীর জমি ফিরিয়ে দিন’ আবেদন কেন? উপাচার্য জানান, বিশ্বভারতী একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে যে হানাহানি করে লাভ নেই, আলোচনায় বসে কাজ হোক। বিশ্বভারতীর অনেক জমি অনেকের কাছে আছে বলে জানান তিনি। সেগুলি ফেরত পেতে চান তাঁরা। সে ক্ষেত্রে আবেদনেই কাজ হবে বলে আশা বিদ্যুৎবাবুর।
এদিন পদযাত্রার আগে দুপুরে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব সৌগত চট্টোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানান, বিশ্বভারতীর দুটি মুখ্য প্রবেশদ্বার অর্থাৎ পশু চিকিৎসালয়ের সামনে এবং একটি হোটেলের সামনের অংশ দখলমুক্ত করে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে শান্তিনিকেতন উপ-ডাকঘর সংলগ্ন এলাকায় বহুদিন থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা দোকানগুলিকে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং পরিবেশবান্ধব এলাকায় পরিণত করা হয়েছে। শুধুমাত্র দোকান সরানো হয়েছে বলেই নয় ঘর অধিগ্রহণ করে রেখেছিলেন যাঁরা তাঁদেরও সরানো হয়েছে বলে জানান সৌগতবাবু। বিশ্বভারতী প্রাণিবিদ্যা বিভাগের পাঁচটি ঘর এক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ২০০৬ সাল থেকে অধিগ্রহণ করে রেখেছিলেন। সেই ঘরগুলিকে নবীন অধ্যাপকদের গবেষণার স্বার্থে ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।