বোলপুরে সুভাষ দত্ত। নিজস্ব চিত্র
পরিবেশ বিধি মেনে বিশ্বভারতী কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশন করছে না বলে আবারও অভিয়োগ করলে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। বৃহস্পতিবার বোলপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, সম্প্রতি পরিবেশ আদালত একটি রায়ে জানিয়েছে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে ২০২৫ সালের মধ্যে কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের কাজ শেষ করতে হবে। জেলাশাসককে এ বিষয়ে রিপোর্টও দিতে বলা হয়েছে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কাজ করা হবে।
প্রসঙ্গত, সুভাষ দত্তের মামার ভিত্তিতে ২০২০ সালে জাতীয় পরিবেশ আদালত বিশ্বভারতীকে আইন মোতাবেক কঠিন ও তরল বর্জ্য পদার্থের ব্যবস্থাপনা করতে হবে বলে নির্দেশ দেয়। কিন্তু তা না-হওয়ায় পুনরায় সুভাষ মামলা করেন। তাতে পরিবেশ আদালত বিশ্বভারতীকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু, এত কিছু পরেও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে এই পরিবেশকর্মীর অভিযোগ। এ দিন সুভাষ দাবি করেন, ‘‘বিশ্বভারতী বর্তমানে পরিবেশ দূষণের আঁতুরঘর হয়ে উঠেছে। ২০১৬ থেকে পরিবেশ আদালত তিন বার কঠিন ও তরল বর্জ্য শোধনের ব্যবস্থাপনা করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ তা অমান্য করেই চলেছেন। বিধি অমান্য করায় রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বিশ্বভারতীকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল। তাও তারা দেয়নি। উপরন্তু, তারা আদালতকে জানিয়েছে, যে কঠিন ও তরল বর্জ্য শোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ তাদের নেই।’’ সুভাষের দাবি, এর পরেও যদি বিশ্বভারতী নির্দেশ না-মানে, তাহলে পুনরায় পরিবেশের আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বলা হয়েছে।
অমর্ত্য সেন ও বিশ্বভারতীর জমি-বিতর্ক নিয়েও মুখ খুলেছেন পরিবেশকর্মী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শান্তিনিকেতনে প্রচুর নামজাদা ব্যক্তি তাঁদেরকে দেওয়া জমির অনেক বেশি ভোগদখল করেছেন। কিন্তু, শুধু অমর্ত্যবাবুকে নোটিস পাঠানো হচ্ছে কেন! তাঁকে নোটিস পাঠানো নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক হচ্ছে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এর সত্য উদ্ঘাটন হওয়া প্রয়োজন।’’ তাঁর প্রশ্ন, বিশ্বভারতী যে দলিলের ভিত্তিতে বাড়তি জমির কথা উল্লেখ করছেন, তারা তা প্রকাশ্যে আনছেন না কেন? কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সত্বর পদক্ষেপ না-করলে জনস্বার্থ মামলা করার হুঁশিয়ারিও দেন সুভাষ। এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি বিশ্বভারতী।