জল নিয়ে সরগরম দুই জেলা

ইদগা মহল্লার নলকূপে হদিস মিলল জীবাণুরই

প্রাথমিক ভাবে ইদগা মহল্লার একটি নলকূপের জলে ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেল বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তবে পুরসভার পাইপলাইনের কলের জলের নমুনায় অবশ্য কোনও গোলমাল ধরা পড়েনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৩৩
Share:

ভোট শেষ। জোট নয়। জল নিয়ে প্রতিবাদে সেই ছবিই ধরা পড়ল বাঁকুড়ার থানার সামনে। — নিজস্ব চিত্র

প্রাথমিক ভাবে ইদগা মহল্লার একটি নলকূপের জলে ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেল বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তবে পুরসভার পাইপলাইনের কলের জলের নমুনায় অবশ্য কোনও গোলমাল ধরা পড়েনি। বাঁকুড়া শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ইদগা মহল্লা এলাকায় টানা কিছুদিন ধরেই ডায়েরিয়া ছড়িয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু মানুষ।

Advertisement

সম্প্রতি এলাকার এক বধূ ডায়েরিয়ায় অসুস্থ হয়েই বাড়িতে মারা যান বলে দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপরেই পুরসভার পাইপলাইনের জল দূষিত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা মঙ্গলবার পুরভবনে তাণ্ডব চালায়।

যদিও বুধবার বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূনকুমার দাস বলেন, “র‌্যাপিড কিট দিয়ে আমরা ওই এলাকার একটি নলকূপের ও পাইপলাইনের কলের জলের নমুনা পরীক্ষা করেছি। সেখানে পাইপলাইনের কলের জলে কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি। তবে নলকূপের জলে ব্যাকটিরিয়ার অস্তিত্ব ধরা পড়েছে।” এরপরেই এ দিন ওই এলাকার নলকূপ ও স্থানীয় পুকুরের জল শোধনে নামে স্বাস্থ্য দফতর। এলাকার আরও কয়েকটি পাইপলাইনের কলের জল ও নলকূপের জলের নমুনা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সেগুলির রিপোর্ট অবশ্য এখনও হাতে আসেনি স্বাস্থ্য দফতরের।

Advertisement

মৃত বধূর স্বামী শেখ মীর কইমুর বলেন, ‘‘রবিবার দুপুরে হঠাৎ স্ত্রী ডায়েরিয়ায় অসুস্থ হয়। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেই রাতেই স্ত্রী বাড়িতে মারা যায়।’’ তাঁর আক্ষেপ, তার ক’দিন আগে থেকেই এলাকায় ডায়েরিয়া ছড়িয়েছে। পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতর একটু উদ্যোগী হলে হয়তো তাঁর স্ত্রীর ওই পরিণতি হতো না। এ দিনও এলাকায় স্বাস্থ্য শিবির চলেছে। নতুন করে অবশ্য কেউ ডায়েরিয়ায় অসুস্থ হননি বলেই জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক। বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত এ দিন বলেন, “আমি আগেই বলেছিলাম পাইপলাইনের জলে কোনও সমস্যা নেই। বিরোধী দলগুলির প্ররোচনাতেই এই ভাবে পুরসভায় তাণ্ডব চালাল একদল মানুষ।”

বস্তুত, প্রথম থেকেই মঙ্গলবারের ওই হামলার পিছনে বিরোধী জোটের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলছে শাসকদল। পুরসভার তরফে পুলিশের কাছে যে এফআইআর করা হয়েছে, তাতেও ২১ জন অভিযুক্তের মধ্যে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ দাস ও সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অশোক রায়ের নাম রয়েছে।

যদিও এই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন সিপিএমের বাঁকুড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রতীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছেন, ‘‘ওই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। কেন তৃণমূল এই ঘটনায় রাজনীতি ঢোকানোর চেষ্টা করছে বুঝে উঠতে পারছি না।” এ দিন বিকেলে সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা বাঁকুড়া শহরে মিছিল করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের বিরুদ্ধে পুরসভা মিথ্যা অভিযোগ করেছে বলে প্রতিবাদ জানায়।

এ দিকে পুরসভায় ভাঙচুরের ঘটনায় ইদগা মহল্লার এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেখ আবদুল বারিক ওরফে জুম্বাকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বাঁকুড়া আদালত। অভিযুক্ত সিপিএম কর্মীদের অবশ্য পুলিশ গ্রেফতার করেনি।

পুলিশের দাবি, ফুটেজে অভিযুক্ত সিপিএম কর্মীদের দেখা যায়নি। আদৌ সিপিএম কর্মীরা জড়িতে কি না তার প্রমাণও এখনও পুলিশের হাতে আসেনি। ধৃত ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়ে এই ঘটনায় কোনও দলের উস্কানি রয়েছে কি না তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় বাকি অভিযুক্তদেরও সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement