Ajay River

দোরগোড়ায় ফুঁসছে অজয়, চিন্তায় সুন্দরপুর

পড়াশোনার পাঠ শিকেয় উঠেছে। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ভাস্কর মাঝি, দশম শ্রেণির প্রিয়া ঘোষেরা বলে, ‘‘সব সময়ে কী হয় কী হয় ভাব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নানুর শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৫
Share:

ভরা অজয়। নানুরের সুন্দরপুর গ্রামের কাছে। —নিজস্ব চিত্র।

গত বন্যার ক্ষত এখনও পুরোপুরি শুকোয়নি। তার মধ্যেই দোরগোড়ায় ফুঁসছে অজয় নদ। দুশ্চিন্তায় তাই ঘুম হারিয়েছে নানুরের সুন্দরপুর গ্রাম। পালা করে রাত জেগে বাঁধ পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা।

Advertisement

প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্র জানা গিয়েছে , ওই গ্রামের প্রায় ৫০০ মিটার দূর দিয়ে বয়ে গিয়েছে অজয় নদ। ২০২১ সালে পুজোর মুখেই অজয়ের বাঁধ ভেঙে কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় গোটা গ্রাম। ভেসে যায় ঘর, গবাদিপশু, মাঠের ফসল এমনকি অর্ধনির্মিত প্রতিমাও। নিরাশ্র‍য় হয়ে পড়ে ১১৮টি পরিবার। দীর্ঘদিন অজয়ের বাঁধে ত্রিপলের তাঁবুতে দিন কেটেছে তাঁদের। সে বারে প্রশাসনিক সহযোগিতায় পুজো হলেও গ্রামবাসীদের পুজো কেটেছে নিরানন্দে।

তার পরে দু’বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও সকলে ভাল ভাবে গুছিয়ে বসতে পারেনি। তার মধ্যে অজয়ে গত চার দিন ধরে জল বাড়াতে কার্যত আতঙ্কে ঘুম ছুটছে গ্রামবাসীদের। গ্রামবাসী লালু ঘোষ, বাবন মাঝি , বুদ্ধদেব মাঝিরা বলেন, ‘‘গত বন্যায় আমরা সর্বস্বান্ত হয়েছি। কোনও রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু করতে পেরেছি। অজয় যে ভাবে ফুঁসছে, আবার নিরাশ্রয় হয়ে পড়তে হবে কি না জানি না।’’গ্রামবাসী হারাধন মাঝি, স্বপন ঘোষ, দুর্যোধন মাঝিরা বলেন, ‘‘গত বন্যায় আমরা কিছুই বাঁচাতে পারিনি। তাই এ বারে মূল্যবান জিনিস আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে এসেছি।’’

Advertisement

এই পরিস্থিতি পড়াশোনার পাঠ শিকেয় উঠেছে। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ভাস্কর মাঝি, দশম শ্রেণির প্রিয়া ঘোষেরা বলে, ‘‘সব সময়ে কী হয় কী হয় ভাব। কিছুতেই পড়ায় মন বসাতে পারছি না।’’ পুজোর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। অজয়ের পাড়ে দোল খাচ্ছে কাশফুল। শিল্পীর বাড়িতে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। কিন্তু সুন্দরপুর গ্রামে পুজো পুজো সেই গন্ধটা যেন নেই। সব সময় একটা চাপা আতঙ্ক ছেলে-বুড়ো সবাইকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে।

গৃহবধূ সোনালি ঘোষ, সন্ধ্যা মাঝিরা বলেন, ‘‘সে বারে বন্যায় পুজোর আনন্দ ম্লান হয়ে যায়। এ বারেও অজয়ের মতিগতি ভাল ঠেকছে না। তাই এখনও ওসব করিনি। দুর্যোগ কাটার অপেক্ষায় রয়েছি।’’ ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা সংশ্লিষ্ট থুপসড়া পঞ্চায়েতের প্রধান ভরত মাঝি বলেন, ‘‘আবার অজয় ফুঁসছে। তাই গ্রামবাসীদের ঘুম নেই। রাত জেগে সবাই পালা করে বাঁধ পাহারা দিচ্ছি।’’ বিডিও (নানুর) শৌভিক ঘোষাল বলেন, ‘‘সেচ দফতর প্রশাসনকে সতর্ক রয়েছে। অজয়ের বাঁধে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement