হেতমপুরের এই মন্দির সংস্কারের আর্জি। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত
দুর্লভকাজ সমৃদ্ধ শতাব্দী প্রাচীন টেরাকোটার শিব মন্দির বাঁচাতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন দুবরাজপুরের হেতমপুর গ্রামবাসীদের একাংশ। সপ্তাহ খানেক আগে যথাযথভাবে মন্দির সংস্কারের আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের মন্ত্রী, ডেপুটি স্পিকার, সাংসদ থেকে জেলাশাসক সর্বত্র চিঠি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
সূত্রের খবর, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণকে (এএসআই) জানানো হয়েছে গ্রামবাসীদের আবেদনের কথা। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘মন্দির বাঁচাতে গ্রামবাসীদের চিঠির প্রেক্ষিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুর থেকে মাত্র তিলোমিটার দুয়েক দূরে, হেতমপুর গ্রামের গোবিন্দ সায়ের ও গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় ঘেঁষে রয়েছে চন্দ্রনাথ শিবমন্দির। হেতপুরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ১৮৪৭ সালে টেরাকোটার কাজ সমৃদ্ধ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। ভিন্ন স্থাপত্যের নিদর্শন বহনকারী অষ্টকোণাকৃতি, ন’টি চূড়া বিশিষ্ট এই মন্দিরটি পূর্ব দিকে মুখ করা। মন্দিরগাত্রে হিন্দু দেবদেবী ,পৌরাণিক দৃশ্যাবলির সফল রূপায়ণের পাশাপাশি ইউরোপীয় শিল্পশৈলীর প্রভাবও। সেখানে রানি ভিক্টোরিয়া থেকে ব্রিটিশসাম্রাজ্যের প্রতীক।
স্থানীয় বাসিন্দা নীলোৎপল মুখোপাধ্যায়, প্রদীপ দে, রূপম চক্রবর্তী, তীর্থ চক্রবর্তী, সেখ সেলিম আলিদের দাবি, মন্দিরটি ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি হিসাবে সংরক্ষিত। কিন্তু, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক কাজই নষ্ট হতে বসেছে। এই মন্দির বাঁচাতেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি আমার। স্থানীয়রা জানিয়েছেন শুধু চন্দ্রনাথ মন্দিরই নয়, এই মন্দিরের সমান্য তফাতে হেতমপুর হাতিতলা পেরিয়েই রয়েছে দেওয়ানজী শিব মন্দির। তিন তিনটি শিব মন্দিরের মধ্যে একটি মন্দিরই টেরাকোটার। দক্ষিণমুখী এই দেওয়ানজী মন্দির দেউল রীতির। পোড়া মাটির চমৎকার কারুকার্ষে শোভিত। এই মন্দিরও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দ্রনাথ মন্দিরটিকে বাঁচাতো মন্দিরের গর্ভগৃহে এবং সামনে বেশ কিছু সিমেন্ট বালির কাজ হয়েছে। সিন্থেটিক রং করা হয়েছে। পোড়ামাটির কাজ সেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না-হলেও পোড়ামাটির মন্দিরের সঙ্গে সিমেন্টবালির প্রলেপ আখেডরে মন্দিরের আয়ু কমিয়ে দিচ্ছে।গ্রামবাসীদের দাবি, পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ তত্ত্বাবধানে মন্দির সংস্কারে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে চন্দ্রনাথ মন্দির সংস্কার করে সেটির গৌরব ফিরিয়ে দেওয়া হোক।