বাজেয়াপ্ত হল যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র।
ভুল বুঝিয়ে আধার কার্ড লিঙ্ক করিয়ে রাসায়নিক সারের কালোবাজারির চেষ্টার অভিযোগ উঠল। সিউড়ি ২ ব্লকের দমদমা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালগ্রামে অবশ্য মিলিত ভাবে ওই অপচেষ্টা রুখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আধার লিঙ্ক করানোর জন্য আনা ই-পস (ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অফ সেল) যন্ত্র ও একটি ডায়েরি কৃষি আধিকারিকদের হাতে তুলে দিয়েছেন স্থানীয়েরা। অভিযোগের তির ওই ব্লকের পুরন্দরপুর এলাকার এক সার ব্যবসায়ী ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে লিখিত আর্জি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা গিয়েছে, গোয়ালগ্রামের বাউড়িপাড়া লাগোয়া ধরমতলায় দু’জন লোক সার বিক্রির নামে গরিব মানুষদের আধার লিঙ্ক করাচ্ছেন এবং প্রত্যেকের হাতে একটি করে এইডি বাল্ব তুলে দিচ্ছেন, এই খবর বুধবার সকালে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তাতে সতর্ক হন স্থানীয় চাষিরা। এলাকায় গিয়ে আধার লিঙ্কের যন্ত্র নিয়ে কাজে থাকা লোকজনকে ঘিরে ধরেন। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান ও কৃষি দফতরের আধিকারিকদের। আসেন প্রধান এহসানউল হক, মহকুমা সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) চঞ্চল প্রামাণিক, ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা সুপ্রভাত পাল অনেকে।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে আধার কার্ডের ভিত্তিতে শুধুমাত্র রাসায়নিক সার বিক্রি হয়ে থাকে। স্থানীয় চাষিরা জানাচ্ছেন, নিয়ম অনুযায়ী একটি আধারের সাপেক্ষে এক জন চাষি বছরে ১০ বস্তা রাসায়নিক সার নাহ্যমূল্যে পেতে পারেন। অভিযোগ, সেই কাজ পুরন্দরপুরে এক সার ব্যবসায়ীর পয়েন্ট অফ সেল যন্ত্র নিয়ে করা হচ্ছিল। কাজে বাধা দেওয়ার আগে ৪৭ জনের আধার লিঙ্ক করানো হয়েছিল বলেও দাবি। বাউড়ি পাড়ার বাসিন্দা শ্রীকান্ত বাউড়ি বলছেন, ‘‘এলাকার মানুষ এত কিছু কী ভাবে বুঝবেন। সকলে সরল বিশ্বাসে লিঙ্ক করিয়েছেন।’’
স্থানীয় চাষি জাকির হোসেন, চাষি তথা তৃণমূলের বুথ সভাপতি সামিরুল হকেরা বলছেন, ‘‘যাঁদের জমি নেই বা সামান্য দু’চার কাটা জমি তাঁদের আধার লিঙ্ক করানো দেখে সন্দেহ হয়।’’ অন্য দিকে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলছেন, ‘‘সারের জন্য আধার লিঙ্কের তবু যুক্তি আছে। যখন শুনলাম, এইডি বাল্ব দেওয়া হচ্ছে, তখন বুঝি গলদ আছে।’’ এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, স্থানীয় দুই যুবক লাইসেন্স ছাড়া সার বিক্রি করেন। তাঁদের মাধ্যমে পুরন্দরপুরের ওই ডিলারের লোকজন এসেছিলেন। বেগতিক বুঝে সকলে চম্পট দেন। বহুবার চেষ্টা করেও অভিযুক্ত ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মহকুমা সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) চঞ্চল প্রামাণিক বলছেন, ‘‘এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’