গুঞ্জা গ্রামের কাছে সেই নির্মীয়মাণ উড়ালপুলে ব্যারিকেড। নিজস্ব চিত্র।
টর্চের আলো দেখিয়ে নির্মীয়মাণ উড়ালপুলে উঠতে নিষেধ করা হয়েছিল দুই বাইক আরোহীকে। কিন্তু তাঁরা নিষেধাজ্ঞা শোনার অবস্থায় ছিলেন না বলে থানায় অভিযোগ করল নির্মীণকারী সংস্থা। ৭ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়া-ধানবাদ ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের জয়পুর থানার গুঞ্জার কাছে একটি অসম্পূর্ণ উড়ালপুলের রাস্তার ফাঁক থেকে নীচে পড়ে গিয়ে মারা যান দুই বাইক আরোহী। তাঁদের পরিবার অবশ্য ওই দাবি মানেনি।
মৃতেরা হলেন পুরুলিয়া মফস্সল থানার রানিবাঁধ গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ মাহাতো (৩৫) ও স্বপন মাহাতো (৩৫ )। দুই প্রতিবেশী পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুতে পরিবার দু’টি কার্যত জলে পড়েছে। দু’জনের পরিবারে স্ত্রী, সন্তান ও বয়স্ক বাবা-মা রয়েছেন। দুর্ঘটনার পরে পরিবারের তরফে নির্মাণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে গাফিলতির মৌখিক অভিযোগ তোলা হলেও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
তবে জাতীয় সড়ক নির্মাণকারী সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার নিগমানন্দ নায়েক গত সোমবার জয়পুর থানায় ওই দুর্ঘটনার তদন্ত চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাতে তিনি দাবি করেছেন, ওই দুই বাইক আরোহী ‘নো এন্ট্রি’ ভেঙে উড়ালপুলের ওই রাস্তায় ওঠেন। তাঁরা অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ছিলেন। ওই সংস্থার রক্ষী তাঁদের টর্চের আলো দেখিয়ে ওই পথে যেতে নিষেধ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁরা সেই বারণ শোনার অবস্থায় ছিলেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উড়ালপুলের দুই প্রান্তেই নতুন করে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। তবে আলোর ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। মৃত আনন্দ মাহাতোর কাকা সুধীর মাহাতো দাবি করেন, ‘‘যদি ওখানে ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড লাগানো থাকত এবং আলোর ব্যবস্থা থাকত, তাহলে তাঁরা সেখানেই বাধা পেয়ে পড়ে যেতেন। উড়ালপুলের রাস্তার ফাঁক থেকে নীচে পড়তেন না। যদি সেখানে কোনও রক্ষী ছিলেন, তাহলে তিনি দুর্ঘটনার পরে থানায় বা পরিবারে খবর দিলেন না কেন?’’ তাঁর দাবি, ওঁদের ফিরতে দেরি দেখে ফোন করা হয়। তখন পুলিশ তাঁদের দুর্ঘটনার খবর দেন এবং দ্রুত হাসপাতালে যেতে বলেন।
তাঁর দাবি, ‘‘ঝামেলা চাই না। শুধু এটুকুই দাবি, দুর্ঘটনায় দু’টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেল। যে ভাবেই হোক পরিবার দু’টিকে সাহায্য করা হোক। পরিবারগুলির অবস্থা সরেজমিনে দেখে নিয়ে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিন ওই উড়ালপুল নির্মাণকারী সংস্থা।’’