আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃতদের। — নিজস্ব চিত্র।
বিয়ের জন্য এক যুবকের কাছ থেকে টাকা দাবি করেছিলেন প্রেমিকার বাড়ির লোকজন। সেই টাকা জোগাড় করতে বন্ধুকে নিয়ে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ছক কষেছিলেন ওই যুবক। কিন্তু ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়ার পর তাঁরা খুন করেন। পুরুলিয়ার দর্জিপাড়ায় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে পরিচারিকাকে খুনের ঘটনায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। ওই ঘটনায় ভিকি শর্মা এবং রাকেশকুমার রজক নামে দুই ছুতোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার দর্জিপাড়ার বাসিন্দা পেশায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রদীপ কর্মকারের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় পরিচারিকা পার্বতী বাদ্যকর (৫২)-এর রক্তাক্ত দেহ। বন্ধ ঘরে চাদর দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় পড়েছিল পার্বতীর দেহ। তাঁর মাথার পিছনে আঘাত ছিল। পাশাপাশি, রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় প্রদীপের স্ত্রী নন্দিতা কর্মকারকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই হত্যাকাণ্ডের কিনারা করে পুলিশ। ওই কাণ্ডে ভিকি এবং রাকেশ নামে দুই ছুতোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, রবিবার ভিকি এবং তাঁর বন্ধু প্রদীপের বাড়ি থেকে টাকা লুটের ছক কষেন। তাঁরা জানতে পেরেছেন, ভিকি এবং রাকেশ ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে কাঠের কাজ করেছিলেন কিছু দিন আগে। সেই সূত্র ধরেই রবিবার আবার তাঁরা প্রদীপের বাড়িতে যান। পুরনো কাঠ আছে কি না তা দেখার নাম করে লুটপাটের চেষ্টা করেন। পুলিশের ধারণা, সেই সময় তাঁদের দেখে ফেলায় খুন হতে হয় পার্বতীকে। গুরুতর জখম করা হয় নন্দিতাকেও। পুলিশের দাবি, জেরায় অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন ভিকি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টাকার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন ভিকি। কিন্তু কেন? পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ভিকি একটি মেয়েকে ভালোবাসত। কিন্তু মেয়েটির পরিবার বিয়েতে রাজি ছিল না। মেয়েপক্ষ কিছু টাকাও দাবি করেছিল। সেই টাকা জোগাড়ের জন্য মরিয়া হয়েই ভিকি এই অপরাধ ঘটিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কাজের সূত্রে ভিকির ওই বাড়িতে আগেও যাতায়াত ছিল। তিনি জানতেন ওই বাড়িতে টাকাপয়সা রয়েছে।’’
সোমবার ধৃতদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁদের ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা এবং ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।