তদন্তে খাতরা থানার পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র
লিফ্ট দেওয়ার নাম করে এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে গাড়িতে তুলে জঙ্গলের রাস্তায় তাঁর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল দুই যুবকের বিরুদ্ধে। ওই মহিলাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার খাতড়া থানার কাশিপুর জঙ্গলের রাস্তায়। অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে খাতড়া থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের পুখুরিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত ৪৮ বছর বয়সি ওই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী নিজের ডিউটি সেরে বুধবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ সিমলাপাল বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিলেন। সেই সময় একটি ছোট গাড়িতে দু’জন ব্যক্তি এসে তাঁকে লিফ্ট দিতে চান। রাজিও হয়ে যান ওই মহিলা। বেশ কিছুটা রাস্তা যাওয়ার পরই কাশিপুর জঙ্গলের রাস্তায় মহিলাকে শ্লীলতাহানি করে ওই দুই ব্যক্তি। তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টাও করা হয় বলেও অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থাতেই কোনও রকমে পালিয়ে কিছুটা দূরে থাকা একটি আদিবাসী বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন তিনি।
খবর পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন মহিলাকে উদ্ধার করে খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিযোগ দায়ের হতেই পুলিশ অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া দুই যুবকের নাম মিঠুন সিংহ ও প্রশান্ত দুলে। ধৃত দুই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার খাতড়া মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। নির্যাতিতার স্বামী বলেন, ‘‘স্ত্রীর বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় আমাদের সন্দেহ হয়। বার বার ওঁকে ফোন করার চেষ্টা করলেও নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে ফোনে কথা বলা যাচ্ছিল না। যে গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলেন আমার স্ত্রী, শুধু সেই গ্রামের নামটুকু শুনতে পেয়েছিলাম। পরে আমার ছেলে আর আমি ওই গ্রামে গিয়ে স্ত্রীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমি চাই, এই ঘটনায় যারা যুক্ত, তাদের কঠোর থেকে কঠোরতম সাজা হোক।’’
চিকিৎসারত অবস্থায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে নির্যাতিতা বলেন, ‘‘গাড়িতে ওঠার সময় আমি বুঝতে পারিনি ওই দু’জনের এমন বদ মতলব ছিল। আমি ওদের শাস্তি চাই।’’
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করে আজ খাতড়া মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছিল। তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। অভিযুক্তদের দিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার পাশাপাশি শনাক্তকরণ প্যারেড করানো হবে। অভিযুক্ত দুই যুবকই ঘটনার সময় মত্ত অবস্থায় ছিল। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।’’