বিকিকিনি: খাতড়ার পরকুলের মেলায়। নিজস্ব চিত্র
পুরনো ঐতিহ্য মেনে এ বারও টুসু পরবে মাতল খাতড়ার পরকুল গ্রাম লাগোয়া কংসাবতী নদীর তীর। বুধবার দিনভর মেলা প্রাঙ্গণে চলল জনস্রোত। কিন্তু টুসু বিসর্জনের সেই ঐতিহ্য আর চোখে পড়ে না। তা নিয়ে প্রবীণদের কম আক্ষেপ নেই। সে সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে টুসু নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন আয়োজকেরা। এ দিন মেলায় তা দেখে অনেকেই খুশি। প্রবীণদের আশা, প্রতিযোগিতার মোড়কেই ফিরে আসুক টুসু নিয়ে উন্মাদনা।
পরকুল গ্রামের টুসু মেলা কমিটির সম্পাদক অজিত মাহাতোর দাবি, কংসাবতী নদীর তীরে এই টুসু মেলা আড়াইশো বছরেরও প্রাচীন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘প্রায় দুই দশক আগেও বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ টুসু ও চৌডল নিয়ে বিসর্জন দিতে আসতেন। তাতে মেলা চত্বর বর্ণময় হয়ে উঠত। তা দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করতেন। কিন্তু ইদানীং টুসুর বিসর্জন কমতে কমতে প্রায় হাতেগোনায় এসে পৌঁছেছে।’’ সে কারণেই মেলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বুধবার সাতটি টুসু নাচের দল প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়। তা দেখে নবীন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাও খুশি। তাঁরাও কেউ কেউ বলেন, ‘‘সবাই একটু উদ্যোগী হলেই টুসু বিসর্জন আগের মতোই জমজমাটি করা যাবে।’’
মেলায় তবে হরেক কিসিমের পসরা কম আসেনি। বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে দোকান সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। জিলিপি, পাপড়, ঘুঘনি প্রভৃতি খাবার থেকে শুরু করে গৃহস্থালির নিত্য প্রয়োজনীয় কাঠ, পাথর, লোহা, অ্যালুমিনিয়ামের জিনিসপত্রের বেচাকেনাও জমে যায়।
পরকুল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে রানিবাঁধের পরেশনাথের পৌষ মেলাও দীর্ঘদিনের। সেখানেও এখন টুসু বিসর্জনের সেই ভিড় আর নেই। উদ্যেক্তারা তাই মেলায় আসা মানুষজনকে আনন্দ দিতে টুসু গানের পরিবর্তে বাউল ও ঝুমুর গানের আখড়া বসিয়েছেন।