শেষ বেলায় মিছিল করে ভোট প্রচার বামফ্রন্টের। বুধবার রামপুরহাটে ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।
প্রলোভন তো ছিলই। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মিটিং মিছিলে দেখতে পেলেই শাসক দলের কাছ থেকে শুনতে হচ্ছিল হুমকি। এমনই চাপা সন্ত্রাসের জন্য দু’সপ্তাহ আগে রামপুরহাট পুরসভা নির্বাচন ঘিরে বামফ্রন্টের মিছিলে যে কর্মী-সমর্থকদের দেখা গিয়েছিল, বুধবার বিকালে আর দেখা মিলল না তাঁদের!
বাম নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, ‘‘পাড়া আগলাতেই সমর্থকদের মিছিলে নিয়ে যাওয়া হয়নি।’’
দু’ সপ্তাহ আগে সিপিএমের জেলা সম্পাদক রামচন্দ্র ডোম নিজে মিছিলে উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন, রামপুরহাট, নলহাটি, মাড়গ্রাম, মুরারই থানার বেশ কিছু সক্রিয় বামপন্থী কর্মীরাও। এ দিনের মিছিলে কিন্তু তাঁদের খুব একটা দেখা যায়নি। সে দিনের মিছিলে বামপন্থী কর্মীদের উপস্থিতি দেখে জেলা সিপিএমের সম্পাদক রামচন্দ্র ডোম তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যে রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড়ে বলেছিলেন, ‘‘আজকের মিছিল দেখে বামপন্থীরা উৎসাহিত হবেন। কর্মীদের মধ্যে অনেক আস্থা এবং মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবে।’’ কিন্তু দু’ সপ্তাহের মধ্যে কি এমন ঘটল যে শহরের বামপন্থী কর্মীরা তাঁদের সমর্থকদের পাড়া আগলে রাখতে ব্যস্ত রাখলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বামফ্রন্টের এক প্রার্থী জানালেন, ‘‘কিছুদিন আগে কলকাতা কর্পোরেশন নির্বাচন অনেকেই টিভিতে দেখেছেন। কর্মীরা সেই সমস্ত দেখে নিজেদেরকে গুটিয়ে রেখেছেন। সেই জন্য মিছিলে কেবলমাত্র সক্রিয় কর্মী যারা এলাকায় ভোট করছেন কেবলমাত্র তারাই এ দিনের মিছিলে যোগ দিয়েছেন।’’ রামপুরহাট পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বামফ্রন্ট প্রার্থী ফরওয়ার্ড দলের স্বপন দত্ত এর আগের বছর কাউন্সিলর ছিলেন। তার আগে স্বপনবাবুর স্ত্রী বন্দনা দত্ত বামফ্রন্ট পরিচালিত পুরবোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। স্বপনদত্ত বললেন, ‘‘ওয়ার্ডে শাসক দলের নেতারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তৃণমূল করার জন্য হুমকি দিচ্ছে। মিটিং মিছিলে দেখলে শাসানি দিচ্ছে। এছাড়াও নানান রকম প্রলোভন চলছে।’’
রামপুরহাট পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী সঞ্জীব মল্লিক এর আগে দু’বার একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। বিগত লোকসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট সমর্থিত প্রার্থী কামরে এলাহি রামপুরহাট পুরসভার ১৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে কেবলমাত্র এই ওয়ার্ড থেকে বিজেপি, তৃণমূল প্রার্থীদের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। সেই ওয়ার্ড থেকে দু’ সপ্তাহ আগে বামফ্রন্টের মিছিলে সবথেকে বেশি কর্মী সমর্থক হাজির ছিল। কিন্তু বুধবারের মিছিলে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কেবলমাত্র সক্রিয় কর্মী যারা মিছিলে অংশ গ্রহণ করে। সঞ্জীব বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে শাসক দলের নানান হুমকির জন্য কৌশল গত কারণে আমরা আমাদের সমর্থকদের মিছিলে আনতে চাইনি।’’
বিরোধীরা অবশ্য বলছে, ‘‘রামপুরহাটে এখন আর কোনও সংগঠনই নেই ওদের, বুধবার সেই জন্য এ ভাবেই ব্যাখ্যা দিল বামদল।’’