প্রস্তুতি চলছে। ছবি: সঙ্গীত নাগ
জয়চণ্ডী পাহাড়ে ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমার বড় অংশের শুটিং করেছিলেন সদ্যপ্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এ বারে তাঁর নামেই আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়োজিত হতে চলা ‘জয়চণ্ডী পর্যটন উৎসব’-এর মূল মঞ্চের নাম রাখছেন উদ্যোক্তারা। উৎসবের নানা অনুষঙ্গেই জড়িয়ে থাকবেন সৌমিত্র। উৎসব কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাধনচন্দ্র মিত্রের কথায়, ‘‘উৎসবে আমরা প্রয়াত অভিনেতাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে চাইছি।”
এ বার পর্যটন উৎসবের ১৫তম বর্ষ। যদিও করোনা-পরিস্থিতিতে এ বারে উৎসব করা আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে দোলাচলে ছিলেন উদ্যোক্তারা। স্বাস্থ্য-বিধি মেনে উৎসব আয়োজন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। এলাকার বাসিন্দাদের বড় অংশ যদিও চাইছিলেন, উৎসব যাতে হয়। সামাজিক মাধ্যমগুলিতেও এ নিয়ে চর্চা শুরু হয়।
উৎসব কমিটির সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর দাবি, ‘‘স্থানীয় লোকজনের আগ্রহেই আমরা উৎসব আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদিও স্থির হয়েছে, কিছুটা ছোট করে উৎসব হবে।” উৎসব কমিটির উপদেষ্টা বিষ্ণুচরণ মেহেতাও জানান, পুরুলিয়ায় করোনার সংক্রমণ অন্য জেলার চেয়ে অনেকটাই কম। তবে যতটা সম্ভব স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই উৎসব করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সম্প্রতি উৎসব নিয়ে আলোচনায় বসেন কমিটির সদস্যেরা। সেখানে উৎসবের মাধ্যমে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাধনবাবু জানান, মূল মঞ্চে সাজানো হবে সৌমিত্রবাবুর অভিনীত বিভিন্ন সিনেমার চরিত্রগুলির ‘কোলাজ’ দিয়ে। ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমার যে অংশের শুটিং জয়চণ্ডীতে হয়েছিল, সেই দৃশ্য-সহ সিনেমার দুই চরিত্র, ‘গুপী’ ও ‘বাঘা’কেও তুলে ধরা হবে। ‘প্রজেক্টর’-এর মাধ্যমে দেখানো হবে, সিনেমার অংশ বিশেষও। তাঁর কথায়, ‘‘পাহাড়ে যে গুহায় লুকিয়ে ছিলেন উদয়ন পণ্ডিতের চরিত্রে অভিনয় করা সৌমিত্র, সেটির সামনে ফ্লেক্স দেওয়া হবে। উৎসব প্রাঙ্গণে থাকা দোকানগুলিকে বিভিন্ন সারিতে সাজিয়ে প্রতিটির নাম রাখা হবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নানা সিনেমার নামে।’’
তবে করোনা-পরিস্থিতিতে এ বার উৎসবে অনেকটাই কাঁটছাঁট করা হচ্ছে বলে জানান উৎসব কমিটির সভাপতি তথা রঘুনাথপুরের পুর-প্রশাসক মদন বরাট। তিনি বলেন, ‘‘বাইরের শিল্পীদের অনুষ্ঠানে প্রচুর ভিড় জমে। তাই এ বারে তা হবে না। সব অনুষ্ঠানই করবেন স্থানীয় শিল্পীরা।” রাত ৯টার মধ্যে মূল মঞ্চের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা থাকবে বলে জানিয়ে মদনবাবু আরও বলেন, ‘‘উৎসবে আসা মানুষজনের কাছে প্লাস্টিক ও থার্মোকল ব্যবহার না করা নিয়ে প্রচার চালানো হবে।’’