সিউড়ি রবীন্দ্র সদনে স্মার্ট পঞ্চায়েত সংক্রান্ত কর্মশালা। নিজস্ব চিত্র।
লক্ষ্য ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে গতিশীল, প্রাণবন্ত, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা। তাই গোটা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর করা হয়েছে। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের প্রতিটি স্তরে যে কোনও কাজ এখন পোর্টাল নির্ভর। ‘রোড ম্যাপ ফর স্মার্ট পঞ্চায়েত ২.০’ প্রকল্পে নতুন পদ্ধতিতে কী ভাবে কাজ করতে হবে, মঙ্গলবার এ নিয়ে একটি কর্মশালা হয়ে গেল সিউড়ির রবীন্দ্র সদনে। অয়োজক পঞ্চায়েত ও গ্রমোন্নয়ন দফতর।
উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম সচিব (তথ্যপ্রযুক্তি) শমীক দাস, জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি স্বর্ণলতা সরেন, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কৌশিক সিংহ, ডিআরডিসি-র প্রোজেক্ট ডিরেক্টর আজমল হোসেন এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিকেরা। উপস্থিত ছিলেন প্রতিটি ব্লকের বিডিও, যুগ্ম বিডিও, পিডিও, ব্লক ইনফরমেশন অফিসার, প্রতিটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং পঞ্চায়েতের সচিব, নির্মাণ সহায়ক ও ডেটা এন্ট্রি অপারেটরেরা। আর প্রশিক্ষণ দিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরে থেকে আসা এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞেরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় যে কোনও কাজ, সেটা এলাকা উন্নয়ন হোক, সরকারি অর্থের ব্যবহার, মানুষকে পরিষেবা দেওয়া, তাঁদের অভাব, অভিযোগ শোনা থেকে পঞ্চায়েতে নিজস্ব তহবিল-সহ নানা তথ্য রিয়েল টাইমে আপলোড করতে হবে নির্দিষ্ট পোর্টালে। যাতে মাউসের এক ক্লিকে জেলা বা রাজ্য থেকে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় কোনও পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদ কী অবস্থায় রয়েছে জানা যায়। কোথায় কে পিছিয়ে, কোন কোন দিকে নজর দিতে হবে তা দেখতে পাওয়া যায়।
জানা গিয়েছে, এখন থেকে ১৯টি পোর্টালে নির্দিষ্ট সময়ে সব তথ্য আপলোড করতে হবে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে, পঞ্চায়েত ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, বাংলা পাড়া বৈঠক, গ্রাম পঞ্চায়েত ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, অনলাইন সরল ‘আইএফএমএস’, ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস (ট্রেড এনওসি), পঞ্চায়েত অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, পঞ্চায়েতের ট্যুরিজ়ম, রুরাল রোড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, মিটিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, স্মার্ট হেল্থ ক্লিনিক, অনলাইন কর্মশ্রী, হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট বোর্ড সার্ভিস প্রমুখ।
প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানান, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে এমন একটি পর্যায়ে উন্নীত করা হচ্ছে, যাতে পরিষেবার মান অনেক উন্নত ও স্বচ্ছ হবে। একটি পঞ্চায়েতের দূরতম স্থানে বসবাসকারী এক জন মানুষ যদি সরকারি সুবিধা পাওয়ার অধিকারী হন বা পেতে চান— সেটা মসৃণ ভাবে পেয়ে যাবেন।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে, গ্রামোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম সচিব (তথ্যপ্রযুক্তি) বলেন, ‘‘পরিষেবা উন্নত করতে ইতিমধ্যেই ৩০টি পরিষেবাকে অনলাইন করে দেওয়া হয়েছে। আরও ১৬টি পরিষেবা অনলাইনে চালু হবে। অর্থাৎ পঞ্চায়েত ব্যবস্থার প্রতিটি কাজকে আইটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটা গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদ নির্দিষ্ট নিয়মে কাজ করবে। তথ্য সামনে থাকলে কোথায় কোনও খামতি থাকলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা সহজ হবে।’’