Shantiniketan

Tourist: পর্যটকের ভিড়ে উধাও সব বিধি

প্রতি বছর শীতের আমেজ আসতে না আসতে শান্তিনিকেতনে ভিড় জমাতে শুরু করেন পর্যটকরা।

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২১ ০৯:২৪
Share:

অসচেতন: মাস্ক ছাড়াই পর্যটকদের ভিড় শান্তিনিকেতনে। সোমবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

পর্যটকের ভিড়ে থিকথিক করছে শান্তিনিকেতন। অথচ চারদিকে চাইলেই দেখা যায় সেখানে বালাই নেই মাস্কের। দূরত্ববিধির তোয়াক্কা নেই। খোলা মুখে, স্যানিটাইজ়ার এর ব্যবহার না করে চলছে দেদার ঘোরাঘুরি, দরদাম আর কেনাকাটা। সার্বিক অসচেতনতার এই ছবিতে আরও বড় বিপদের আশঙ্কায় স্থানীয়েরা।

Advertisement

প্রতি বছর শীতের আমেজ আসতে না আসতে শান্তিনিকেতনে ভিড় জমাতে শুরু করেন পর্যটকরা। এই বছরও অন্যথা হয়নি। এখানকার পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ বিশ্বভারতীর মূল ক্যাম্পাস এবং রবীন্দ্রভবন বন্ধ থাকার পরেও সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন ভিড় চোখে পড়ছে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের আশেপাশে এবং সোনাঝুরির হাটে। সপ্তাহান্তের দুই দিনে সেই ভিড় লাগামছাড়া হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, গত শনিবার ও রবিবার বোলপুরের অধিকাংশ হোটেল এবং রিসর্ট কানায় কানায় ভর্তি ছিল। আগামী কয়েক সপ্তাহেও আগাম বুকিংয়ের ছবি প্রায় এক। স্বাভাবিক ভাবে মুখে হাসি ফুটেছে খাবার দোকানের ব্যবসায়ী থেকে টোটো চালক, হোটেল মালিক থেকে হস্তশিল্পের বিক্রেতাদের মুখে।

Advertisement

সেই খুশির সঙ্গেই ঘনাচ্ছে আশঙ্কার মেঘ। কারণ, এ বারের সপ্তাহান্তে শান্তিনিকেতনে আসা পর্যটকদের যে ছবি চোখে পড়ল, তার সবটা জুড়েই যেন অসচেতনতা। শতকরা ৯০ ভাগ পর্যটকের মাস্ক নেই। সোনাঝুরি হাটে কয়েক হাজার মানুষের সমাগমে দূরত্ববিধিও শিকেয় উঠেছে। হোটেল ও রিসর্টগুলিতে সাবধানতা ও পরিচ্ছন্নতার কথা বলা হলেও পর্যটকেরাই জানাচ্ছেন, কড়াকড়ি নেই সেখানে। যদিও তাঁরা তাঁদের মতো করে চেষ্টা করছেন বলে জানান বোলপুরের এক পরিচিত রিসর্টের কর্ণধার। তাঁর অভিজ্ঞতা, সবচেয়ে বেশি সমস্যা তৈরি হচ্ছে করোনার দুটি প্রতিষেধক নেওয়া লোকেদের ক্ষেত্রে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, তাঁদের ক্ষেত্রে টিকার শংসাপত্র থাকলে আর কিছুর প্রয়োজন হচ্ছে না। ফলে বারবার বলার পরেও অনেকেই মাস্ক পরছেন না।

শহরবাসীর অনেকের দাবি, পুর এলাকা জুড়ে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাও চোখে পড়ার মতো। কয়েক মাস আগে শহরে ঢোকার মুখে একাধিক স্থানে করোনা পরীক্ষার কথা ঘোষণা করা হলেও, তার আর কোনও চিহ্ন নেই। খোলা রাস্তায়, হাটে, দলে দলে লোক মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়ালেও পুলিশের তরফ থেকে কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না বলে দাবি স্থানীয়দের। যদিও বোলপুর পুলিশ সূত্রের খবর, শনি ও রবিবার মাস্ক না পরায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, যে সমস্ত হোটেল ৫০ শতাংশের বেশি পর্যটকদের স্থান দিচ্ছে, তাদেরকেও প্রথম ধাপে সতর্ক করা হচ্ছে, আগামীতে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা করা হবে।

সোনাঝুরি হাটেও একটি নির্দিষ্ট দিনে সচেতনতা প্রচার, মাস্ক বিতরণ এবং প্রয়োজনে নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বোলপুর শহরে করোনার প্রকোপ আবারও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদেরও। চিকিৎসক অনির্বাণ দাসগুপ্ত বলেন, “পুজোর পর থেকে কলকাতার পাশাপাশি জেলায় করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। এই অবস্থায় জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে এখন থেকে সাবধানতা অবলম্বন না করলে আবার ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হতে পারে। প্রশাসন, হোটেল মালিক, পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারা সতর্ক না হলে সেই সম্ভাবনা এড়ানো কঠিন হয়ে যাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement