ডাকছে... বর্ষায় সেজে উঠেছে গড়পঞ্চকোটের প্রকৃতি। ছবি: সঙ্গীত নাগ
পুজোর বাকি আর দিন দশেক। কিন্তু পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর মহকুমার দুই পর্যটনস্থল, বড়ন্তি এবং জয়চণ্ডী পাহাড় এলাকার সরকারি ও বেসরকারি অতিথি নিবাসগুলির অনেক ঘরের বুকিং এখনও হয়নি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের একাংশের।
গত দু’বছর করোনার জেরে পর্যটন ব্যবসায় মন্দার ছায়া ছিল। এ বছর পুজোয় ব্যবসা জমবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, গড় পঞ্চকোটের সরকারি-বেসরকারি অতিথি নিবাসগুলিতে পুজোয় ক’দিনের আগাম বুকিং প্রায় সম্পূর্ণ। কিন্তু জয়চণ্ডী ও বড়ন্তির অতিথি নিবাসগুলিতে অনেক ঘর এখনও ফাঁকা রয়েছে। করোনার আবির্ভাবের পূর্বে পুজোর সময়ের চিত্রটা এমন ছিল না। পর্যটন ব্যবসায়ীদের আশা, পুজোর আগে সব ঘরের বুকিং হয়ে যাবে।
জয়চণ্ডীতে ‘পিপিপি মডেলে’ তৈরি অতিথি নিবাসের কর্মকর্তা মলয় সরখেল জানান, ‘ডরমেটরি’-সহ তাঁদের সাতটি কটেজ রয়েছে। বুকিং হয়েছে ৫০ শতাংশ। মলয়ের কথায়, ‘‘অন্য বারের তুলনায় পুজোয় আগাম বুকিংয়ের অবস্থা কিছুটা খারাপ। মনে হচ্ছে, পুজোয় বৃষ্টি হতে পারে, এই আশঙ্কায় লোকজন বেড়াতে আসতে নারাজ। আমাদের আশা পুজোর আগে সমস্ত কটেজেরই বুকিং হয়ে যাবে।” বড়ন্তিতে ‘পিপিপি মডেলে’ গড়ে ওঠা ‘ইকো ট্যুরিজ়মের’ সুপারভাইজ়ার সাত্যকি দে জানান, তাঁদের ১২টি ঘরে থাকতে পারবেন ৪৬জন। একটি বাদ দিয়ে বাকি সবগুলির বুকিং হয়ে গিয়েছে। সাত্যকি বলেন, ‘‘অতীতে পুজোর এক-দু’মাস আগেই সমস্ত ঘরের বুকিং হয়ে যেত। এ হয়েছে অনেকটাই দেরিতে। আর এক অতিথি নিবাসের কর্মকর্তা নির্মল হোড়ের দাবি, তাঁদের ১৫টি ঘরের অর্ধেকের বুকিং হয়েছে। তাঁর ধারণা, ‘‘পুজো এ বার অনেকটাই এগিয়ে এসেছে। এই সময় পুরুলিয়ায় গরম ভালই থাকে। সে কারণে হয়তো পর্যটকদের একাংশ পুজোয় এখানে আসতে চাইছেন না।”
এ বছর অগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে পর্যটনস্থলগুলিতে ভিড় অনেকটাই কম ছিলে বলে দাবি অতিথি নিবাসগুলির কর্মকর্তাদের। আগে এই ছবি দেখা যায়নি বলে দাবি তাঁদের। সাত্যকি বলেন, ‘‘এই সময় থেকেই ডিসেম্বরের বুকিং শুরু হয়ে যায়। এ বার এখনও শুরু হয়নি।”
গড় পঞ্চকোটের ছবিটা অবশ্য ভিন্ন। বাম আমলের শেষের দিকে জেলার দক্ষিণ প্রান্তের অযোধ্যা পাহাড় এলাকা যখন মাওবাদী-উপদ্রুত হয়ে পড়েছিল, সে সময় থেকেই পর্যটকেরা গড়পঞ্চকোট আসা শুরু করেন। সেখানে বন উন্নয়ন নিগমের ‘প্রকৃতি ভ্রমণকেন্দ্র’ ছিলই। পরে গড়ে উঠেছে আরও চারটি অতিথি নিবাস।
‘পিপিপি মডেলে’ তৈরি ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ অতিথি নিবাসের কর্ণধার সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, তাঁবু-সহ তাঁদের অতিথি নিবাসে থাকার ঘর ১৪টি। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত সব ঘরের বুকিং সম্পূর্ণ। ‘প্রকৃতি ভ্রমণকেন্দ্রের’ ট্যুরিজ়ম ম্যানেজার সুমন করের দাবি, পুজোয় ক’দিন তাঁদের ২৩টি ঘর ‘বুক’ করে ফেলেছেন পর্যটকেরা। মাস দু’য়েক আগেই বুকিং সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন সুপ্রিয় ও সুমন। বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি পুয়াপুর ও রামপুরের দু’টি অতিথি নিবাসের ম্যানেজাররা জানাচ্ছেন, মোটের উপরে, তাঁদের সমস্ত ঘরেরই বুকিং শেষ।