নতুন রূপে। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো
নতুন করে দরজা খুলল পুরুলিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র, দুয়ারসিনি প্রকৃতিভ্রমণ কেন্দ্রের। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান মুখ্য বনপাল (সাধারণ) রবিকান্ত সিনহা। যোগ দেন মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পশ্চিম চক্র) সৌরভ চৌধুরী, জেলার তিন ডিএফও রামপ্রসাদ বাদানা, অমৃতা দত্ত ও অর্ণব সেনগুপ্ত। রবিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রের উদ্বোধনের পরে, কংসাবতী (দক্ষিণ) বন বিভাগের ডিএফও অর্ণববাবু জানান, প্রকৃতিভ্রমণ কেন্দ্রটি দক্ষিণ পুরুলিয়ার পর্যটনকে সমৃদ্ধ করবে।
বান্দোয়ান থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে, বান্দোয়ান ২ বনাঞ্চলের কুচিয়া বিটের আওতায় রয়েছে প্রকৃতি ভ্রমণকেন্দ্রটি। প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরেই ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভুম জেলার গালুডি ও ঘাটশিলা। বন দফতর সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রে তিনটি কটেজ ও দু’টি ডর্মিটরি আছে। দু’শয্যার প্রতিটি কটেজের দিনপ্রতি ভাড়া আড়াই হাজার টাকা। আর প্রতি ডর্মিটরিতে চারটি করে শয্যা রয়েছে। শয্যাপিছু খরচ ৩০০ টাকা। তবে পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগম না ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’, কারা কেন্দ্রটি চালাবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। যৌথ পরিচালনায় থাকছে আসনপানি বন পরিচালন কমিটি। ইতিমধ্যে বুকিংও চালু হয়েছে। পর্যটকদের সুবিধায় গাইড নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে বন দফতর।
২০০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন দফতরের তৎকালীন রাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাসীবালা সহিস কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন। বছর পাঁচেক ভাল ভাবে চলার পরে, মাওবাদী সক্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটকদের আনাগোনা কমতে থাকে। ২০০৬-এ কেন্দ্রের পাশে দুয়ারসিনি হাটতলার কাছে পঞ্চায়েত সমিতির নির্মিত অতিথি আবাস ল্যান্ডমাইন দিয়ে উড়িয়ে দেয় মাওবাদীরা। কটেজের দায়িত্বে থাকা কর্মীদেরও হুমকি দেওয়া হয়। তার পরেই বন্ধ হয়ে যায় ভ্রমণকেন্দ্রটি।
অব্যবহারে ভ্রমণকেন্দ্রটি ক্রমে হানাবাড়ির চেহারা নেয়। এ দিকে, মাওবাদী প্রভাব কমায় ও পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকায় ২০১৬-র শেষের দিকে কেন্দ্রটি ফের চালু করতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের অর্থে এক বছরের মধ্যে বেশির ভাগ কাজও শেষ হয়। তবে অর্থের অভাবে কটেজের কিছু কাজ বাকি থাকায় কেন্দ্রটি চালু করতে পারছিল না বন দফতর। শেষমেষ লকডাউনের আগে আবার অর্থ বরাদ্দের পরে, শেষ হয় কাজ।