বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ বার বিশ্বভারতীতে মহিলা সেল গঠন করা হল। সম্প্রতি একের পর এক মহিলা হেনস্থা ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ জমা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। তাই কর্মক্ষেত্রে হোক বা শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও ভাবেই ছাত্রী বা মহিলা কর্মী-আধিকারিকেরা যাতে হেনস্থার শিকার না হন, সে দিকে তৎপর হল বিশ্বভারতী। আট সদস্যের ওই কমিটি গঠন করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো।
কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই মহিলা বা ছাত্রী হেনস্থার বিরুদ্ধে কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। যৌন হেনস্থার বিষয়ে বিশ্বভারতীতে ইতিমধ্যেই এই মর্মে একটি কমিটি রয়েছে। ‘ইন্টারনাল কমপ্লেনস কমিটি ফর দ্য প্রিভেনশন অফ সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট এগেইনস্ট উইমেন ইন ওয়ার্কপ্লেস’ (সংক্ষেপে আইসিসি, যা বিশাখা কমিটি নামে পরিচিত) নামের ওই কমিটি থাকলেও ছাত্রী ও মহিলা কর্মীদের হেনস্থার ঘটনা কমেনি। আগের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আমলে কখনও বিনয়ভবন, কখনও বিদ্যাভবনের অ্যান্থ্রোপলজি বিভাগ থেকে একের পর এক যৌন ও মানসিক হেনস্থার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। তবে এই নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও রকম পদক্ষেপ করেননি বিদ্যুৎ, এমনটাই অভিযোগ পড়ুয়াদের। এই মর্মে পড়ুয়ারা আইনি ব্যবস্থা, অনশন, অবস্থান বিক্ষোভ করলেও তৎকালীন কর্তৃপক্ষ কোনও সদর্থক ভূমিকা পালন করেনি বলে দাবি নির্যাতিতাদের। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক এই মর্মে বিশ্বভারতীকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য একটি নির্দেশ দেয়। এর পরেই গত ৯ জানুয়ারি ‘উইমেন্স সেল’ নামে একটি কমিটি গঠন করেন কর্তৃপক্ষ। আট সদস্যের এই কমিটিতে বিভিন্ন ভবনের মহিলা অধ্যাপিকা ও বিভাগীয় প্রধানদের রাখা হয়েছে। সেখানে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়।
মহুয়া বলেন, ‘‘এই কমিটির কাছে যৌন হেনস্থা ছাড়াও অন্যান্য যে কোনও ধরনের হেনস্থা ও মানসিক নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন ছাত্রী ও মহিলা কর্মী-আধিকারিকেরা।’’ এমতাবস্থায় অতীতে যাঁরা হেনস্থার শিকার হয়েছেন, তাঁরা এই কমিটি থেকে সুবিচার পান কি না, সে দিকেই তাকিয়ে নির্যাতিতারা।