মান্ডি গ্রামে পুলিশি প্রহরা। ইনসেটে বিপ্লব রায়। নিজস্ব চিত্র
লাঠিপেটা করে খুন করা হল বাঁকুড়ার তালড্যাংরার মান্ডি গ্রামের এক তৃণমূল কর্মীকে। মৃতের নাম বিপ্লব রায় (৪৮)। শনিবার রাতে মান্ডি গ্রামে দু’দলের সংঘর্ষে গুরুতর জখম হন বিপ্লব। তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনায় মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তালড্যাংরা থানার পুলিশ মোট আট জনকে গ্রেফতার করেছে। এ নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। যদিও বিপ্লবের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ‘এলাকায় রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের’ জেরেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১০টা নাগাদ মান্ডি গ্রামে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দু’টি দল। সেই সময় বিপ্লবের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বিপ্লবের দাদা কৌশিক রায় বলেন, ‘‘আমার ভাই ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিল। গত কাল রাত ১০টা নাগাদ বিপ্লব রাস্তার ধারে স্থানীয় কয়েক জনের সঙ্গে বসে গল্প করছিল। সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর গোষ্ঠীর লোকজন ভাইয়ের উপর চড়াও হয়। সংঘর্ষে ভাই গুরুতর আহত হয়। পরে আমরা ভাইকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাই। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই ভাই মারা যায়। এলাকায় রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে ভাইকে খুন হতে হল।’’ মৃতের পরিবার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে এলাকায় শাসক দলের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে তৃণমূল নেতা বিশ্বজিতের সঙ্গে নিতাই চক্রবর্তীর গোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব। পেশায় সেচ দফতরের কর্মী বিপ্লব নিতাইয়ের অনুগামী হিসাবে পরিচিত ছিলেন।
তৃণমূল অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব মানছে না। তালড্যাংরার তৃণমূল ব্লক সভাপতি মনসারাম লায়েক বলেন, “বিজেপি সংগঠিত ভাবে আমাদের কর্মী বিপ্লব রায়কে নৃশংস ভাবে খুন করেছে। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী অনেক আগে তৃণমূল করলেও গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র হয়ে কাজ করেছিলেন। তিনি এখন তৃণমূলে আসতে চাইলেও দলে যোগ দিতে পারেননি। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি এখন বিজেপির নেতা। আমি অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ আবার বিজেপি-র বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজিত অগস্তি বলেন, “তৃণমূল মিথ্যাচার করছে। অভিযুক্তরা বিজেপি-র কেউ নয়। এই খুন আসলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের ফল।”