Joypur Panchayat Samiti

জয়পুরে স্থায়ী সমিতি, বাম-কংগ্রেস সমর্থনে, জয় শাসকদলের

বুধবার পঞ্চায়েত সমিতির ন’টি স্থায়ী সমিতি গঠিত হয়। একটি স্থায়ী কমিটি গঠনের ভোটের শেষে দেখা যায় তৃণমূলের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৭টি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়পুর শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:১৮
Share:

পাঠ: কোথায় কী ভাবে দায়িত্ব সামলাতে হবে, তা নিরাপত্তাকর্মীদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন পুলিশের দুই আধিকারিক। বুধবার জয়পুরে। নিজস্ব চিত্র

বামেদের দুই এবং কংগ্রেসের এক জন প্রতিনিধির সমর্থন জুটিয়ে পুরুলিয়ার জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনে বিজেপিকে টেক্কা দিল শাসকদল।

Advertisement

বুধবার পঞ্চায়েত সমিতির ন’টি স্থায়ী সমিতি গঠিত হয়। একটি স্থায়ী কমিটি গঠনের ভোটের শেষে দেখা যায় তৃণমূলের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৭টি। অন্য দিকে, বিজেপির পক্ষে পড়েছে ১২টি ভোট। এরপর বাকি আটটি স্থায়ী সমিতি গঠনের ভোটাভুটিতে যায়নি বিজেপি।

সূত্রের খবর, এ দিন স্থায়ী সমিতি গঠনে তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেন সমিতির সিপিএম সদস্য বৈকুণ্ঠ কুমার এবং ফরওয়ার্ড ব্লক সদস্য অনিতা মাহাতো। উপরকাহান পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান গৌরীরানি মাহতোও তৃণমূলকে সমর্থন করেন। ফলে, ভোটে বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত হয়।

Advertisement

গত বছর ৩ জানুয়ারি জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন হয়েছিল। পঞ্চায়েত ভোটে ২১ আসনের সমিতিতে বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়ই ন’টি করে আসন দখল করে। কংগ্রেস, সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লক একটি করে আসনে জিতেছিল। নিয়ম অনুযায়ী, পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনে সমিতির সদস্যেরা ছাড়া, ভোটদানের অধিকার রয়েছে ব্লকের সব’কটি পঞ্চায়েতের প্রধান, ব্লক এলাকা থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়ক ও সাংসদের। বিজেপির পক্ষে ছিল ১৪টি ভোট।

পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল সদস্যের বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছিল। ফলে, সমিতিতে তৃণমূলের আসন কমে হয়েছিল আট। কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলকে সমর্থন করায় সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল নয়ে। ব্লকের তিন পঞ্চায়েতের প্রধান, এক জন জেলা পরিষদের সদস্য এবং বিধায়কের ভোট নিয়ে তৃণমূলের মোট ভোট সংখ্যা হয়েছিল ১৪। এ দিন সমিতির এক সিপিএম এবং এক ফরওয়ার্ড ব্লক সদস্য এবং কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েত প্রধানেরর সমর্থন মেলায় তৃণমূলের পক্ষে পড়ে ১৭টি ভোট। পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো সংসদে ছিলেন। জয়পুর পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিজেপির অনুকুলে ভোট-সংখ্যা কমে হয় ১২টি।

সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘আমরা বিজেপি কিংবা তৃণমূল, কাউকেই সমর্থন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এ দিন কী হয়েছে, জানি না। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত ভেঙে কেউ তৃণমূলকে ভোট দিলে যা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা নেওয়া হবে।’’

ফরওয়ার্ড ব্লকের এক জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘‘দলীয় হুইপ অগ্রাহ্য করে গত বছর বোর্ড গঠনের সভায় গিয়েছিলেন আমাদের দলের জন প্রতিনিধি। তখনই তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।’’ জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি ফণিভূষণ কুমার বলেন, ‘‘আমি জানি না কে কাকে ভোট দিয়েছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ তৃণমূল নেতা কীর্তন মাহাতো বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিরা দেখেছেন, কী ভাবে এলাকার উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। সেই জায়গা থেকেই আমরা তাঁদের সমর্থন প্রত্যাশা করেছিলাম। তাঁরা আমাদের সমর্থন করেছেন।’’

অন্য দিকে বিজেপির জেলা সহসভাপতি রবীন সিংহদেওয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সংসদে ব্যস্ত থাকায় সাংসদ আসতে পারেননি। জয়পুরের প্রধান অসুস্থ থাকায় অনুপস্থিত ছিলেন। আমরা আমাদের সদস্যদের সমর্থন পেয়েছি। কী ভাবে তৃণমূল সমর্থন জোগাড় করেছে, তা অনেকের কাছেই স্পষ্ট।’’ স্থায়ী সমিতি গঠন উপলক্ষে ব্লক কার্যালয় সহ গোটা এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। জয়পুরে মোট ৩৫০জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছিল। হাজির ছিলেন মহকুমাশাসক (ঝালদা) সুমন্ত কবিরাজ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement