মাড়গ্রাম থানায় আক্রান্তি সিপিএম কর্মী শিখা লেট। শনিবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
সিপিএমের পদযাত্রায় হাঁটায় মাকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে মাড়গ্রাম থানার দুনিগ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামে ওই ঘটনার পরে অসুস্থ বৃদ্ধা মাড়গ্রাম থানায় ছেলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছেন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক বিবাদের অভিযোগ জমা পড়েছে। তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
গোপালপুর গ্রামের ৬০ বছরের বৃদ্ধা শিখা লেটের দুই ছেলে। স্বামীকে নিয়ে শিখা দেবী ছোট ছেলের কাছে থাকেন। ছোট ছেলে শ্রীদান লেট বলেনন, ‘‘আজ দুপুরে দাদা যখন মাকে মারধর করে তখন আমি ঘরেই ছিলাম। আমি ঘরের ভিতর থেকে দাদার মারের চোটে মাকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখলাম। দাদার মারে মায়ের পায়ে এবং কোমরে আঘাত লেগেছে।’’ শিখা বলেন, ‘‘আমার স্বামী দীর্ঘদিন থেকে সিপিএম করেন। আমিও সিপিএম করি। দু’দিন আগে গ্রামে সিপিএমের পদযাত্রায় হেঁটেছিলাম। সেই কারণে আমার ছেলে শনিবার দুপুরে আমাকে মারধর করে।’’
ঘটনা হল, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যেই বীরভূম জেলায় বুথে বুথে পদযাত্রা শুরু করেছে সিপিএম। জেলার নানা জায়গায় সেই পদযাত্রা শুরুও হয়েছে। সিপিএম নেতাদের দাবি, পদযাত্রা থেকে শাসক দল তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। দুনিগ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের উদ্যোগে সেই পদযাত্রাতেই যোগ দিয়েছিলেন শিখা।
অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, সেই বড় ছেলে বিধান লেট স্থানীয় দুনিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। সিপিএমের পদযাত্রায় হাঁটার জন্য মাকে মারধর করার কথা অস্বীকার করে বিধান লেট বলেন, ‘‘মা যে সিপিএমের পদযাত্রায় হেঁটেছিল তাও আমার জানা নেই।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মায়ের সঙ্গে আমার স্ত্রীর দীর্ঘদিন থেকে ঝগড়া বিরোধ আছে। স্ত্রীর সঙ্গে বিরোধে দুর্গাপুজোর সময় থেকেই মা বাবার থেকে আমি আলাদা আছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শনিবার দুপুরে আমি বাড়ি গিয়ে দেখি স্ত্রীর সঙ্গে মায়ের ঝগড়া চলছে। স্ত্রী কান্নাকাটি করছে। আমি আমার মাকে এবং স্ত্রীকে ঝগড়া বন্ধ করার জন্য বলি। তার মাঝেই মা মাটিতে পড়ে যায়।’’
ঘটনার জন্য শাসক দল তৃণমূলকেই দায়ী করেছেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘শাসক দলের নেতারা এখন এ রকমই করবেন। তবে প্রতিরোধও হবে। আমরা মহিলার পাশে আছি। যদি এরকম ঘটনা সত্যই হয়ে থাকে তাহলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলব।’’
পাল্টা পারিবারিক ঘটনায় রাজনীতি জড়ানোর অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। দলের জেলা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটা পারিবারিক ঘটনায় রাজনীতির রং চড়ানো হচ্ছে। এর বেশি কিছু নয়।’’