মহম্মদ মহিদউদ্দিন ওরফে মামন শেখ। নিজস্ব চিত্র।
গরু পাচার মামলায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন। এরই মাঝে ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলায় নতুন করে জেলায় তৎপরতা শুরু করেছে সিবিআই। শনিবার তেমনই এক গণধর্ষণের একটি মামলায় শান্তিনিকেতন থানার উত্তরনারায়ণপুর এলাকা থেকে পঞ্চানন খাঁ-সহ তিন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তবে, এই গণধর্ষণ মামলায় কঙ্কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান, তৃণমূল নেতা মহম্মদ ওহিদউদ্দিন ওরফে মামন শেখও তাদের নজরে রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর। মামন প্রথম থেকেই অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ হিসেবে দলের অন্দরে পরিচিত। যদিও মামনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি তাঁর বাড়িতে নেই। এই মুহূর্তে তিনি কোথায় রয়েছেন, তা কোনও ভাবেই জানা যাচ্ছে না।
বিধানসভা নির্বাচনের পরে বোলপুরের একটি গ্রামে বিজেপি সমর্থক এক মহিলার উপর নির্যাতন ও গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এলাকার কয়েক জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ গত বছর একটি মামলাও রুজু করে। কিন্তু, তদন্তের অগ্রগতি বিশেষ হয়নি। পরে জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে এলাকার বেশ কিছু নেতার পাশাপাশি মামনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানান বেশ কিছু পরিবার বলে সূত্রের খবর। পরবর্তী কালে হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলা হিসেবে গণধর্ষণের অভিযোগের তদন্তভার যায় সিহিআইয়ের কাছে। গত বছর সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদা মহিলা অফিসারের নেতৃত্বে তদন্তকারী দল বেশ কয়েকবার ওই নির্যাতিতার বাড়ি ঘুরে যান। এর পর থেকে এই মামলা নিয়ে সিবিআইয়ের তরফ থেকে আর কোনও সক্রিয়তা চোখে পড়েনি।
কিন্তু, শনিবার হঠাৎ ওই ঘটনায় উত্তরনারায়ণপুর তিন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ওই মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মামন শেখেরও। বিরোধীদের অভিযোগ অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে এলাকায় যথেষ্ট দাপট রয়েছে এই মামনের। জমি হাতিয়ে নেওয়া, তোলাবাজি, কঙ্কালীতলা অঞ্চলে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে একাধিক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে হামলায় মামনের নাম জড়িয়েছে বলে অভিযোগ। যে দিন পঞ্চাননদের গ্রেফতার করা হয়, সে দিন মামনের হাড়িতেও গিয়েছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। কিন্তু, বাড়িতে উপপ্রধানের খোঁজ মেলেনি। আপাতত মামন ‘পলাতক’ বলে জানা গিয়েছে। বিজেপি-র বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অষ্টম মণ্ডলের দাবি, “মামনের নেতৃত্বে বিজেপি কার্যকর্তাদের উপর হামলা সব থেকে বেশি ঘটেছে। আজ সে সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।” তৃণমূলের কেউ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।