—প্রতীকী চিত্র।
আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি দল। অথচ মনোনয়ন-পর্বের শুরু থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা চলছেই। পঞ্চায়েতে তৃণমূলের নামে মনোনয়নের সংখ্যা আড়াইশো ছাপিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি স্তরেও মনোনয়ন জমা পড়েছে। দলের নামে কারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পর্যন্ত পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ২৬৬টি মনোনয়ন পড়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক শালতোড়া ব্লকে ১২০, রানিবাঁধে ৯৫, ওন্দায় ১৭, রাইপুরে ১৪ মনোনয়ন জমা পড়েছে। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৫১টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। সেখানেও সর্বাধিক শালতোড়ায় ২২টি, রানিবাঁধে ১৫টি মনোনয়ন জমা পড়েছে।
মনোনয়ন পেশ করছেন কারা? দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহমহাপাত্র ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়নি। মনোনয়ন জমার অনুমতিও দেওয়া হয়নি। কারা দলের নামে মনোনয়ন দাখিল করছেন, জানা নেই।”
ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে যোগ্য প্রার্থী খুঁজতে এ বারে নানা পন্থা নিয়েছে তৃণমূল। তার পরেও জেলায় প্রার্থী নিয়ে ‘দ্বন্দ্ব’ শুরু হয়েছে। সূত্রের দাবি, সমস্যা মেটাতে রাজ্যের তরফে তালড্যাংরার প্রাক্তন বিধায়ক সমীর চক্রবর্তীকে বাঁকুড়ার দলীয় নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে জেলায় পাঠানো হয়েছে। দলের চূড়ান্ত করা প্রার্থিতালিকা নিয়ে কর্মীদের মতভেদ দূর করতে ব্লক ও অঞ্চল ধরে ধরে বৈঠক করছেন তিনি। তবুও প্রার্থী বাছাই নিয়ে মেজিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে।
পঞ্চায়েত স্তরে তৃণমূলের হয়ে শালতোড়ায় মনোনয়ন করা একাধিক দলীয় কর্মীরা বলেন, “আমরা ১২ মাস সক্রিয় ভাবে দল করেছি। জনসংযোগও রয়েছে। প্রার্থী হিসেবে আমাদেরই দলের বেছে নেওয়া উচিত।” দল প্রতীক না দিলে? তাঁদের দাবি, “দল জোর করে কাউকে প্রার্থী হিসেবে চাপিয়ে দিতে চাইলে, আমরা তা মানব না”।
২০১৩-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থীদের ছড়াছড়ি দেখা গিয়েছিল। এ বারেও তেমন পরিস্থিতি হবে কি না, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দলের অন্দরে। সমীর অবশ্য বলেন, “বড় দল হলে কর্মী সংখ্যা বাড়ে। আসনসংখ্যা বাড়ে না। দলের অভিভাবক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। তাঁরাই যোগ্য কর্মীদের প্রার্থী হিসেবে বেছে নেবেন। কর্মীদের একজোট হয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত মানতেই হবে।”
যাঁরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাঁদের নিয়ে সমীর বলেন, “মনোনয়ন যে কেউ জমা দিতে পারেন। দল প্রতীক দেবে এক জনকেই। তিনিই প্রার্থী। বাকিদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হবে।”