কাজল বলেন, ‘‘যদি কেউ ভাবেন আমি অঞ্চল কমিটি (নেতা) হয়ে গিয়েছি, আমি তির মেরে দিয়েছি, আমি হনু হয়ে গেলাম, তা হলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।’’ ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি ইস্তক দলে ‘সক্রিয়তা’ বেড়েছে নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখের। জেলা তৃণমূলের কোর কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন কেষ্টর বিরোধী শিবিরের নেতা বলে পরিচিত কাজল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেই কাজল আবার হুঁশিয়ারি দিলেন দলের নেতাকর্মীদের। বললেন, সরে না গেলে তাঁদের সরিয়ে দিতে বাধ্য হবেন তিনি। হঠাৎ কী নিয়ে এমন ‘চেতাবনি’?
পঞ্চায়েত ভোটের আগে কাজলের অভিযোগ, বেশ কয়েক জন নেতাকর্মীর জন্য দলের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। তাই তাঁদের সামলে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন। সোমবার নানুরের সিঙ্গি গ্রামে একটি কর্মীসভা থেকে কাজল বলেন, ‘‘অনেকেই দলটাকে লুটেপুটে খাওয়ার জায়গা ভেবে নিয়েছ। তাদের আর এক বার চেতাবনি দিচ্ছি— তোমরা সরে যাও, আমাকে যেন সরাতে না হয়। তোমরা তোমাদের শুধরে নাও। সোজা পথে হাঁটো। তোমাদের ভেদাভেদ করার দরকার নেই। মানুষের সেবা করো।’’ এর পরেই সুর চড়া করে কাজলের মন্তব্য, ‘‘আমি বীরভূম জেলার এক জন কোর কমিটির সদস্য। আমার সঙ্গে এলাকার বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি রয়েছেন। আমি দাদাগিরি করতে আসব না। বিধায়কও দাদাগিরি করতে আসবেন না। ব্লক সভাপতিও দাদাগিরি করতে আসবে না। কিন্তু যদি কেউ ভাবেন যে, আমি দাদা-দিদির হাত ধরে টিকিট (পঞ্চায়েত ভোট) পাব, তিনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। যিনি সৎপথে চলবেন এবং গ্রামের মানুষ যাঁকে ঠিক করবেন, তিনিই টিকিট পাবেন। আর এই অঞ্চল কমিটির মধ্যে যদি কেউ ভাবেন আমি অঞ্চল কমিটি (নেতা) হয়ে গিয়েছি, আমি তির মেরে দিয়েছি, আমি হনু হয়ে গেলাম, আমি নেতা হয়ে গেলাম, তা হলে তিনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। আপনাকে দল থেকে বের করতে বেশি ক্ষণ সময় লাগবে না।’’
কিছু দিন আগেই কাজল অভিযোগ করেছিলেন জেলে বসে দল পরিচালনা করছেন অনুব্রত। তাঁর সঙ্গে হয়তো ফোনে কথা হচ্ছে বীরভূমের জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর। সোমবার কাজলের পরামর্শ, ‘‘আপনাদের কাজ করে মানুষের পাশে যেতে হবে।’’ এর পর কাজল টেনে আনেন ‘শহিদ পরিবার’-এর প্রসঙ্গ। বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারগুলো চলে গিয়েছে। মনে জ্বালা, ব্যথা ছিল। আমরা ভেবেছিলাম ২০১১ সালের পরিবর্তনের পর বদলা নেব। যারা আমাদের ভাইবোনদের হত্যা করেছিল, তাদের কাউকে ছাড়ব না। এটা কিন্তু আমাদের শপথ ছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে আসার পর বলেছিলেন, ‘বদলা নয়, বদল চাই।’ আমরা হাত গুটিয়ে নিয়েছিলাম।’’ পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে ডাক দেন তিনি।