নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের হাতেই থাকা স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তাদের এই বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার ভাল কাজ করলে তিনি স্থায়ী চাকরির সুযোগ পাবেন। এমনই পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে এমনই প্রস্তাব দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কোথায় এবং কারা সেই সুযোগ পাবেন তার জন্য কিছু শর্তের কথাও বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত আদৌ কার্যকর হবে কি না, হলে তা কবে থেকে, সে ব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের হাতেই থাকা স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তাদের এই বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় অনেক কনস্টেবল পদ খালি রয়েছে। কারণ, অনেক কনস্টেবলের পদোন্নতি হয়েছে। আগামী দিনে আরও পদ খালি হবে। সেখানে দক্ষ সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করা যায় কি না তা ভাবার জন্য স্বরাষ্ট্র দফতরকে পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। তবে এ ক্ষেত্রে তিনটি শর্তের কথা বলা হয়েছে।
নবান্নের বৈঠকে যা আলোচনা হয়েছে তাতে পদোন্নতির জন্য সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রথমত, কাজের ক্ষেত্রে যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। তাঁরা প্রতিটি কাজ দায়িত্বের সঙ্গে পালন করছেন কি না তার উপরেই হবে মূল্যায়ন। দ্বিতীয়ত, এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে সেই জায়গাতেই যেখানে থানায় কনস্টেবল পদ খালি রয়েছে। তৃতীয়ত, সুযোগ তাঁরাই পাবেন যাঁদের নাম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুপারিশ করবেন। এই দায়িত্ব মূলত থাকবে জেলার পুলিশ সুপারের উপরে। তিনি নির্ভর করবেন যে থানা এলাকায় ওই সিভিক ভলান্টিয়ার কাজ করছেন সেখানকার ওসি এবং এসডিপিও-র রিপোর্টের উপরে।
এখন কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় যান নিয়ন্ত্রণ থেকে পুলিশকে সাহায্য করা বা টহলদারির কাজ করেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। অনেক জায়গাতেই তাঁদের নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। সেই সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়াররা ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, এমন অভিযোগও কম নেই। প্রশাসনের ধারণা, এখন পদোন্নতির প্রস্তাব দেওয়া হলে অনেকেই নিজেদের কাজে মন দেবেন। এর ফলে সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলাতেই তার প্রভাব পড়বে। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই প্রস্তাব দিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে শাসকদলের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্য রয়েছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে নবান্নের।