সুদীপ্তর সই করা এই চিঠি ঘিরেই বেধেছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
কোন নেতাকে মানতে হবে? ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী নাকি একদা ‘পর্যবেক্ষক’ তথা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ? তৃণমূল সূত্রে দাবি, এই প্রশ্নে কার্যত দু’ভাগ জেলার খয়রাশোল ব্লকে শাসক দলের সংগঠন। এই পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার ব্লক কার্যালয়ে একটি বৈঠক ডাকাকে কেন্দ্র করে ফের ‘সংঘাত’ আরও বাড়ল।
চিঠির উপরে ‘ব্লক সভাপতি’ লিখে বৈঠকের ডাক দেওয়া হলেও নীচে সই রয়েছে সুদীপ্তর, যিনি ব্লক সভাপতি নন। বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার কথা সাংসদ তথা কোর কমিটির সদস্য শতাব্দী রায়, পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীরও।
ব্লকের একাধিক নেতার প্রশ্ন, ব্লকে কোনও বৈঠক ডাকতে হলে হলে সেটা ডাকবেন ব্লক সভাপতি কাঞ্চন। সেখানে সুদীপ্ত ঘোষ কেন? ব্লকের আর এক নেতার প্রশ্ন, ‘‘বৈঠক যদি কোর কমিটি ডেকে থাকে, তাহলে বিকাশ রায়চৌধুরীই বৈঠক ডাকতে পারতেন। তিনি ওই বৈঠকে হাজির হবেন সে কথাও উল্লেখ করা নেই কেন?’’ সুদীপ্তপন্থী কিছু নেতার পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ব্লক সভাপতির প্রতি আস্থা রাখতে পারছি না। সুদীপ্তদাই সামলাতে পারবেন।’’
তৃণমূল সূত্রে দাবি, সম্প্রতি কালীঘাটে দলনেত্রীর সঙ্গে বৈঠকে খয়রাশোলের ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী অভিযোগ করেন পর্যবেক্ষক সুদীপ্ত ঘোষের জন্য তিনি ‘স্বাধীন ভাবে’ কাজ করতে পারছেন না। তার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খয়রাশোলের পর্যবেক্ষকের পদ থেকে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত ঘোষকে সরিয়ে দেন বলে দলের অন্দরের খবর। যদিও তাঁকে বীরভূম জেলার কোর কমিটিতে স্থান দেন মমতা। কিন্তু ব্লক সভাপতির বিপক্ষে গিয়ে ওই দিনই সুদীপ্তর সমর্থনে চিঠি দিয়েছিলেন সাত অঞ্চল সভাপতি। সেই থেকে অঞ্চল সভাপতি ও ব্লক সভাপতির মধ্যে সম্পর্কে চিড় খেয়েছে। দলের অন্দরের খবর, খয়রাশোলে কার্যত ভাগ হয়ে গিয়েছে ব্লক তৃণমূল। ব্লক সভাপতি কাঞ্চনের ঘনিষ্ঠদের সোজাসাপ্টা জবাব, ‘‘বুধবারের বৈঠকে উপস্থিত হব না।’’
সুদীপ্ত ফোন ধরেননি। তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই ব্লকে দু’পক্ষকে নিয়ে বসার কথা ছিল। কে বৈঠক ডেকেছে, কারা থাকছেন, জানা নেই। খোঁজ নিতে হবে।’’