রামপুরহাট সব্যসাচী ইসলাম কুসুম্বা গ্রামের দম্পতি গঙ্গাধর হাজরা ও অর্চনা হাজরা। —নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামার বাড়ি কুসুম্বায় জিততে পারল না তৃণমূল। গ্রামের দু’টি আসনেই জিতেছেন বিজেপির দুই প্রার্থী এক দম্পতি। তবে কুসুম্বার দু’টি আসনে হারলেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েত দখল করেছে। ২১ আসনের কুসুম্বা গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ১১টি আসনে, বিজেপি জিতেছে ১০টি আসনে।
গত পঞ্চায়েত ভোটে বিনা লড়াইয়ে জয় এসেছিল। কিন্তু তারপরে লোকসভা ও বিধানসভা— পরপর দু’টি নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামাবাড়ির কুসুম্বা পঞ্চায়েতে জিততে পারেনি তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনে দলের পাঁচ বারের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হলেও কুসুম্বা পঞ্চায়েত এলাকায় ২ হাজার ১৭৮ ভোটে বিজেপির কাছে তৃণমূল হেরেছিল। কুসুম্বা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯টি বুথের মধ্যে ১৩টি বুথে বিজেপির কাছে তৃণমূল হেরেছিল। তার মধ্যে খোদ কুসুম্বা গ্রামের তিনটি বুথ যেমন রয়েছে, তেমনই মুখ্যমন্ত্রীর পৈতৃক ভিটে চাকাইপুর গ্রামও আছে।
লোকসভা নির্বাচনেও শতাব্দী রায় জয়ী হলেও কুসুম্বা গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির কাছে তিন হাজারের বেশি ভোটে তৃণমূল হেরেছিল। এ বার পঞ্চায়েত ভোটেও কুসুম্বা মুখ ফেরাল তৃণমূলের থেকে। বিজেপির হয়ে জয়ী দম্পতি গঙ্গাধর হাজরা এবং অর্চনা হাজরা বলেন, ‘‘আমাদের বিনা অপরাধে জেল খাটিয়েছে তৃণমূল। উন্নয়নমূলক কাজে দুর্নীতিতে জড়িত তৃণমূল। গ্রামের মানুষ সব দেখে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে বীরভূমে এসে কুসুম্বা গ্রামে এসে অসুস্থ দাদুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। দেখা করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অভিষেক কুসুম্বা গ্রামের রাস্তাঘাট, স্কুল, ক্লাবের উন্নয়নের কথা বলেছিলেন। এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সৌজন্য বিনিময় করেছিলেন। তার পরে এই হারে তৃণমূল নেতৃত্ব কিছুটা হলেও ‘অস্বস্তিতে’ বলে দল সূত্রে দাবি। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক ও ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কুসুম্বা গ্রামে কী কারণে হারলাম সেটা আমরা খতিয়ে দেখব। কিন্তু সার্বিক ফলাফলে কুসুম্বা গ্রাম পঞ্চায়েতে আমাদের লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের থেকে ভাল ফল হয়েছে।’’